মেহেরপুর পৌরসভার ক্যাশবপাড়া, বড় বাজার পাড়ার একাংশ, মন্ডলপাড়া পাড়া, গড় পাড়া, ফৌজদারী পাড়া, মহিলা কলেজ পাড়া নিয়ে গঠিত ৬ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে, মহিলা কলেজ, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি কিন্ডার গার্টেন স্কুল। ওয়ার্ডের নতুন মিলিয়ে মোট ভোটারের সংখ্যা বতর্মান ৩ হাজার ৫শত জন। ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান রিটান।
০৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, প্রধান সড়ক নির্মাণ, ড্রেণ নির্মাণসহ বেশ কিছু উন্নয়ন কাজ হয়েছে। ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় নেই ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা। এলাকার লোকজন যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে। তবে পৌরসভার গাড়ি এসে ময়লা আবর্জনা নিয়ে যায় বলে জানান স্থানীয়রা। অধিকাংশ ড্রেণের ঢাকনা নেই এবং ড্রেণগুলো পরিষ্কার না করায় ড্রেণে জমা পানি থেকে দূর্গন্ধ ও মশার উপদ্রপ সৃষ্টি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে পৌর পরিষদের মেয়াদ পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এই ওয়ার্ডের ভাগ্য পরিবর্তন করেনি। তবে সব সমস্যা থেকে সমাধানের চেষ্টা খুজছেন বর্তমান পৌর পরিষদ।
এর মধ্যে কিছু সড়ক নিচু হওয়ার কারনে বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। ড্রেণগুলো নিয়মিত পরিস্কার না করায় পানি নিস্কাশন হয় না। পাড়ার ভিতরের রাস্তাগুলো ভাঙ্গাচুরা। রাস্তাগুলো মেরামত হয়নি দীর্ঘদিন।
মন্ডলপাড়ার জনি বলেন, ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় আমরা মেইন সড়কে ময়লা রেখে আসি। পৌরসভা থেকে এসে প্রতিদিনের ময়লা প্রতিদিন নিয়ে যায়। তবে পাড়ার ভিতরে ময়লা আবর্জনা ফেলার কোন জায়গা নেই। পাড়ার ঠিক মাঝখানে পচা গর্ত নামে একটি আবর্জনা ফেলার জায়গা আছে সেখানেই পাড়ার লোকজন আবর্জনা ফেলে। এলাকার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো না। সামান্য বৃষ্টিতে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় পানি জমে থাকে। ড্রেণগুলো ঠিকমত পরিষ্কার করে না। ড্রেণগুলো পরিষ্কার না করার কারণে অনেক জায়গায় বুজে গেছে। বৃষ্টির সময় বা বাড়ির ব্যবহারের পানি ড্রেণ উপচে রাস্তায় আসে। ফলে নোংরা দূর্গন্ধময় পানি মাড়িয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হয়।
গড় পাড়ার সুজন বলেন, পাড়ার ভিতরে ড্রেণগুলোর অবস্থা ভালো না। অনেকদিন ধরে পরিষ্কার করে না। তাছাড়া ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় রাস্তার পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলতে হয়। অনেক সময় পৌরসভার গাড়ি এসে আবর্জনা নিয়ে যায় আবার ৪-৫দিন যাবত আবর্জনা পড়েও থাকে। বড় বাজারের যাওয়ার রাস্তাটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটিতে পানি জমে চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। এবার বর্ষাতেও জলবদ্ধতা তৈরী হয়েছিল। বারং বার পৌরসভাকে জানিয়ে সেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়।
ক্যাশব পাড়ার হেলাল উদ্দিন বলেন, পাড়ার অলিগলির রাস্তাগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকার কারণে বাড়ির ব্যবহৃত ও বৃষ্টির পানিতে জলবদ্ধতা হয়ে থাকে। নোংরা দূর্গন্ধময় পানি মাড়িয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হয়। ময়লা আবর্জনা ফেলার ডাষ্টবিনের অভাবে সড়কের পাশে দূর্গন্ধময় ময়লা আবর্জনায় স্তুুপ হয়ে পড়ে থাকে। একদিন দুদিন পরপর পৌরসভার গাড়ি এসে ময়লা নিয়ে যায়। ড্রেণগুলো অনেক দেরিতে পরিষ্কার করে। এখানে রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে মেরামত করা হয়নি যার কারণে চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা ভালো।
ফৌজদারী পাড়ার রুনা খাতুন বলেন, এলাকার একাংশে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো হলেও আমাদের অংশে রয়েছে পানি নিষ্কাশনের সমস্যা। দৈনন্দিন ব্যবহৃত ও সামান্য বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পাড়ায় কোনো ডাষ্টবিন নির্মাণ না করায় স্থানীয়রা যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনায় ফেলে। ফলে মশা-মাছির উপদ্রপ বাড়ছে। বাড়ির সামনে খোলা জায়গায় আবর্জনা ফেলার কারণে দূর্গন্ধময় পরিবেশে কষ্ট করেই বসবাস করতে হচ্ছে।
সমস্যা থাকলেও রাস্তা ও ড্রেণের উন্নয়ন লক্ষ্য করা গেছে। তবে অচিরেই যতটুকু সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধানের প্রক্রিয়াও চলমান বলে জানিয়েছেন ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান।
ওয়ার্ডের উন্নয়ন চিত্র:
কামাল প্রিন্টিং প্রেস থেকে কুটুমবাড়ি পর্যন্ত ড্রেণ ও রাস্তা নির্মাণ, মহিলা কলেজ থেকে কমিউনিটি সেন্টার পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ, এডলিক প্রিন্টিং প্রেস থেকে মহির চায়ের দোকান পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেণ নির্মাণ, স্টুডেন্ট টেইলার্স থেকে কুটুমবাড়ি পর্যন্ত পাইপ ড্রেণ ও রাস্তা নির্মাণ, এশিয়া নেট মোড় থেকে বাপ্পি পালের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ও ড্রেণ নির্মাণ, শহীদ মিনার নির্মাণ, সামসুজ্জোহা পার্কের সৌন্দর্য বর্ধন, গড় পুকুরের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলমান। ফৌজদারী পাড়ার হাবিবের বাড়ি থেকে মাহাবুবের বাড়ি পর্যন্ত ফ্লাট সোলিং, ক্যাশবপাড়ার শাপলা টেইলার্স থেকে শ্বাশত নিপ্পনের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা, তহমিনার বাড়ি থেকে মদুদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ, ছাতু খাঁর বাড়ি থেকে গোলাম মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত ড্রেণ নির্মাণ।
মেহেরপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান রিটন বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় বিগত দিন থেকেই নানা সমস্যা ছিলো যা আমি অধিকাংশ সমাধানের চেষ্টা করেছি এখনও যতটুকু সমস্যা আছে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জনগণের স্বার্থে ও ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য যেসব কাজ করার কথা ছিল তা আমি অনেকেই সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। এরপরও কিছু কিছু সমস্যা আছে সেগুলো সমাধানের প্রক্রিয়াও চলমান। অচিরেই সেগুলো সমাধান হয়ে যাবে। আমি আমার এলাকার উন্নয়ন ও জনগণের যতটুকু সেবা দেয়া সম্ভব তা দেয়ার চেষ্টা করেছি।