মায়ের বাড়ি ভারতে হলেও মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশে। বিয়ের পর কয়েক বার দেখা হয়েছে মা ও মেয়ের মধ্যে। সেই কবে থেকে মায়ের মুখটা দেখার জন্য, তার মুখের কথা শোনার জন্য, একটু হাতের পরশ পাওয়ার জন্য বারবার মনটা কাঁদতো মেয়ে আমিরা খাতুনের। কিন্তু দেখা হয়নি দীর্ঘদিন। কাটা তারের বেড়া যেনো তাদের সেই ভালবাসায় বাঁধা হয়েছিল। কিন্তু সেই বাঁধা দুর হলো মায়ের মৃত্যুর পর।
মৃত মায়ের মুখটা এক নজর দেখার আবেদন করেছিলেন মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামের উজ্জল শেখের স্ত্রী মোছাঃ আমিরা খাতুন (৪০)।
তার এই মানবিক আবেদনে সাড়া দেন উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। ভারতীয় ভূখন্ডে মুত্যুবরণকারী মা ওয়াছন বিবি (৯০) এর লাশ শেষ দর্শনের জন্য মানবিক উদ্যোগ নেয় বিজিবি-বিএসএফ।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে ৬ ব্যাটালিয়নের অধিনস্থ মুজিবনগরের আনন্দবাস বিওপির সীমান্তের মেইন পিলার ১০১ এর নিকট ভারতের অভ্যন্তরে তার মা ভারতীয় নাগরিক ওয়াছন বিবি (৯০) এর মরদেহ দেখার সুযোগ করে দেন। এসময় মৃতের নিকট আত্মীয় স্বজনরাও উপস্থিতি ছিলেন।
আজ রবিবার (২০ নভেম্বর) বিকালে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) অধিনায়ক শাহ মোঃ ইশতিয়াক, পিএসসি প্রেসনোটের মাধ্যমে এতথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজিবির পাঠানো প্রেস নোটে জানা গেছে, ভারতের নদীয় জেলার চাপড়া থানার ভাতগাছি গ্রামের ওয়াছন বিবি (৯০) বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যায়। ভারতীয় ভূখন্ডে মুত্যুবরণকারী মাকে শেষ দেখার অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিজিবি-বিএসএফ এর সমন্বয়ে মানবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, উভয় দেশের সীমান্তে শান্তি, সস্প্রীতি এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সু-সম্পর্ক উন্নয়নের অংশ হিসেবে বিজিবি-বিএসএফ এর মানবিক কার্যক্রম। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে উভয় দেশের সীমান্তে বসবাসরত সীমান্তবর্তী জনগণের মধ্যে সুম্পর্ক উন্নয়ন সাধিত হবে এবং ভবিষ্যতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
এছাড়াও উভয় সীমান্তে ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।