আবারও দেখা সাক্ষাৎ শুরু হচ্ছে বিএনপি জামায়াতের। যার শুরুটা হলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির রীতিমত তোপ দাগলেন সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি দাবি জানালেন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর। যদিও বিএনপি-জামায়াতের দেখা সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এটেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যান জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা.সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরসহ ৫ নেতা। খালেদার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেওয়া শেষে সেখান থেকে বের হন দুপুর ১ টা ১০ মিনিটে। এ সময় উপন্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির আব্দুর রহমান মুসা, সহকারী সেক্রেটারি ডা.ফখরুদ্দিন মানিক, প্রচার সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার।
এদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মধ্যে আছেন বলে জানায় মেডিকেল বোর্ড। সোমবার বোর্ডের সদস্যরা আরও জানান, দেশের চিকিৎসা দিয়ে আর বেশি দিন তাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
সংবাদ সম্মেলনের পরের দিনেই পুরোনো বন্ধু জামায়াত হাসপাতালে সাক্ষাতে যাওয়া নিয়ে চলছে আলোচনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে বলে রাজনীতির অঙ্গনে বেশ কয়েকদিন ধরে গুঞ্জন চলছে। যদিও এ বিষয়ে বিএনপি কিংবা জামায়াতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। ফলে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যকার সম্পর্ক আসলেই ছিন্ন হয়ছে নাকি কৌশল সে বিষয়টি সামনে চলে আসছে। যেহেতু সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যাপারে কোনো দলই এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি তাই সম্পর্ক ছিন্নের ব্যাপারটি নিয়ে এখনই বলার মতো সময় আসেনি।
হাসপাতাল থেকে বের হয়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা.সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের জানান, বিএনপি নেত্রীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। তাকে দ্রুত দেশের বাইরে পাঠানোর দাবিও করেন তিনি। বিএনপির সাথে জামায়াতের ঘনিষ্টতা আরও বেড়েছে কি না এ প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি দলটির আমির। যদিও গত জুনে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সমাবেশে বলেছিলেন ‘বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোট এখন আর কার্যকর নেই, কিন্তু আমরা সরকারবিরোধী আন্দোলনে আছি।’দীর্ঘদিন পরে তারা রাজনৈতিক সহযোদ্ধার খোঁজে নিতে গেছে জামায়াত নেতারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উনি শুনেছেন। এছাড়া এবিষয়ে কোন তথ্য তার কাছে নেই।
জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক সবসময়েই ছিলো উল্লেখ করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, ‘ওরা কৌশলগতকারণে সম্পর্কহীনতার কথা বলে। তারা ভোটের আগে শক্তি দেখাতে এবং জনমানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে দৃশ্যমানতা তৈরি করতে চাইবে। তবে এই দেশের জনগণ আর তাদের গ্রহণ করবে না।’