ধানের দাম বাড়ার ফলে চালের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের ব্যবসায়ীরা।
এর আগে গত সপ্তাহে সব ধরনের চালের দাম মানভেদে কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা বেড়ে যায়। ধানের দাম বৃদ্ধি ও সংকটের কথা বলে চালের দাম বাড়িয়ে দেন মিল মালিকরা। তবে মিল মালিকরা বলছেন, ধানের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ছে চালের দাম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক সপ্তাহ আগে বাজারে ধানের দাম ছিলো আটশ টাকা থেকে সাড়ে ৯শ টাকা মন। সেই ধান কয়েকদিন হলো কিনতে হচ্ছে ১০৫০ টাকা সাড়ে এগারোশ টাকা মন হিসেবে। তাই মিলারদের চালের দাম একটু বাড়াতে হচ্ছে।
কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন খুচরা বাজার ও পৌর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা কেজি, কাজললতা ৪৮-৫০ টাকা কেজি, আঠাশ ৪৮-৫০ টাকা কেজি এবং মোটা চাল ৪২-৪৪ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। অথচ দশ দিনের ব্যবধানে বস্তা প্রতি একশো থেকে দেড়শো টাকা বেড়েছে।
মান্নান স্টোরের মালিক আব্দুল মান্নান জানান,কয়েকদিন হলো মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা কেজি, কাজললতা ৪৮-৫০ টাকা কেজি, আঠাশ ৪৮-৫০ টাকা কেজি এবং
মোটা চাল ৪২-৪৪ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। অথচ কয়েক সপ্তাহ আগে বিভিন্ন ধরনের চাল কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা কম ছিলো। তবে কেন দাম বেড়েছে এর কোন কারন তিনি জানাতে পারেনি।
পৌর বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী শাপলা ট্রেডার্সের মালিক আশরাফুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে যে চাল বিক্রি করেছি ৪৮ টাকা কেজি। সেই চাল এখন বিক্রি করছি ৫১ টাকা কেজি।
মোটা চাল বিক্রি হতো ৩৮-৪০ টাকায়। সেটি এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৩ টাকা কেজি হিসেবে। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ধানের দাম বেড়েছে দোহায় দিয়ে সুযোগসন্ধানী অটো মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছে।
হরিপুর এলাকার বাসিন্দা রাশেদ ইসলাম বলেন, ‘আমার পরিবারে সপ্তাহে ১৫ কেজি চাল লাগে। চালের মূল্য বাড়ায় সপ্তাহে বাড়তি টাকাও গুনতে হচ্ছে। কিন্তু আয় না বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
শুধু রাশেদই নয় অনেকেই জানান, চালের বাড়তি দামের কারণে সংসারের খরচ বেড়ে গেছে। চালের দাম না বাড়নোর আহ্বান জানান তারা।
কুষ্টিয়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে বাজারে ধানের দাম ছিলো আটশ টাকা থেকে সাড়ে ৯শ টাকা মন। সেই ধান কয়েকদিন হলো কিনতে হচ্ছে ১০৫০ টাকা সাড়ে এগারোশ টাকা মন হিসেবে। তাই মিলারদের চালের দাম একটু বাড়াতে হচ্ছে।
জয়নাল আবেদিন বলেন, বর্তমানে কাজললতা ও মিনিকেট (সরু) জাতের চালের চাহিদা বেশি থাকায় ধানের বাজারও বেশি হয়। যার কারনে হিসাব মেলাতে গিয়ে বেশি দামে এ ধান কেনার ফলে চালের দামও একটু বেড়ে যায়।
নতুন ধান উঠলে আবার ধানের বাজার কমে যাবে। তখন অটোমেটিকভাবে চালের দামও কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জেলা বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, মিলাররা কোন ঘোষণা ছাড়াই চালের দাম বাড়িয়েছে। তবে কেন বাড়িয়েছে তা খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে আমরা একটি টিম খাজানগর রাইচ মিল এলাকায় মিলারদের অবস্থা কি তা জানতে অভিযানে নামবো।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক (কারিগরি) এ,কে,এম শাহনেওয়াজ বলেন, বাজারে ধানের আমদানী কম থাকায় বেশি দাম দিয়ে ধান কিনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। যার ফলশ্রুতিতে চালের দামও বেড়েছে। তিনি বলেন, আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে আবার নতুন ধান উঠলে চালের দাম কমে যাবে।