বাজারে অনেক নামিদামি ব্র্যান্ডের লেবেলের ওপর যে উপাদানের নাম থাকে। এই লেবেলটাকে কপি করেও অনেক সময় নকল পণ্য বানানো হয়ে থাকে। বিষয়টি এখন আর অত গোপনীয় কিছু নয়। অনেকে টাকা খরচ করেন কিন্তু আসল পণ্যটা কিনতে পারেন না।
যেকোনো কসমেটিকসে এখন ক্যামিকেল থাকবেই। কিন্তু এই ক্যামিকেল যদি নিম্নমানের হয়ে থাকে তাহলে ত্বকের নানা সমস্যা হয়। অ্যালার্জি, নানাবিধ স্কিন ডিজিস এমনকি স্কিন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেড়ে যেতে পারে। তাহলে কি নকল পণ্য চেনা যাবে না? নকল পণ্য চেনার নানা উপায় রয়েছে। কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য দেখলেই বোঝা যাবে পণ্যটি আসল না নকল।
ওয়েবসাইটে গিয়ে মিলিয়ে নিন
কিছু নকল প্রোডাক্ট দেখলেই এখন বোঝা যায়। আজকাল নকল কসমেটিকস তৈরি করা হচ্ছে এমনভাবে যে বিচক্ষণতার সাথে পর্যবেক্ষণ না করলে ধরা খুবই মুশকিল। এই নকল কসমেটিকস চেনার সহজ উপায় হল, কসমেটিকস ব্র্যান্ডের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে যে প্রোডাক্টটি কিনবেন তার আসল ‘চেহারাটা’ দেখে নিন। প্রয়োজন হলে একটি ছবিও সাথে রাখুন। কেনার সময় ছবির সাথে ভালো করে মিলিয়ে নিন। তাহলেই হয়ে যাবে। ওয়েবসাইটে গিয়ে মিলিয়ে নিলেই বোঝা যাবে আপনি কোন পণ্য খুঁজছেন।
প্যাকেজিং দেখুন
প্যাকেজিংটাও আপনি বিচক্ষণতার সাথে পর্যবেক্ষণ করুন। একদম ছোট ছোট ব্যাপারগুলো খেয়াল করুন। ফন্ট, সাইজ এবং প্যাকেজিং কালারটাও মিলিয়ে নিন। এমন কি নকল পণ্যগুলোর ওজনেও ঘাপলা থাকে। যদিও শপে দাঁড়িয়ে প্রোডাক্টের ওজন মাপা একটু অদ্ভুত লাগতে পারে কিন্তু হাত দিয়ে ধরেও আপনি ওজনটা বুঝতে পারবেন।
সিরিয়াল নম্বর ও অন্যান্য তথ্য
প্রোডাক্টের গায়ে লিখা সিরিয়াল নাম্বার, বার কোড এবং ম্যানুফ্যাকচারিং ইনফরমেশনগুলো ভালো করে দেখে নিন। নকল প্রোডাক্ট হয়ে থাকলে বার কোডের প্রথম তিনটি ডিজিট উত্পাদনকারী দেশের কোডের সাথে ম্যাচ করবে না। বেশির ভাগ সময় ফেইক কসমেটিকসের গায়ে সিরিয়াল নাম্বার থাকে না। যদি সিরিয়াল নাম্বার পেয়েও জান তাহলে আবার চোখ বন্ধ করে কিনে ফেলবেন না যেন! প্রোডাক্টের গায়ে থাকা সিরিয়াল নাম্বারের সাথে প্যাকেটের সিরিয়াল নাম্বার মিলিয়ে নিন। মিলে গেলে তবেই কিনুন।
উপাদানের বিষয়গুলো
জেনুইন হাই অ্যান্ড কসমেটিকস ব্র্যান্ডগুলো প্রোডাক্ট সম্পর্কিত তথ্যগুলো কয়েকটা ভাষায় দিয়ে থাকে। আর একটি ব্যাপার লক্ষ্য রাখবেন, প্রোডাক্টে ব্যবহূত উপাদানগুলোর উল্লেখ রয়েছে কিনা। নকল পণ্য উত্পাদনকারীরা অনেক সময় এমন সব কালারের লিপস্টিক, আইশ্যাডো, ব্ল্যাশ থেকে শুরু করে ব্রাশ, ব্লেন্ডারগুলো এমন সব কালারের তৈরি করে যা রিয়েল ব্র্যান্ডগুলো করেনি। কাজেই কসমেটিক কেনার সময় রিয়েল প্রোডাক্টের কালারের সাথে মিলিয়ে দিন। একজ্যাক্ট কালার মিললে তবেই কিনুন। সেক্ষেত্রে কসমেটিক ব্র্যান্ডের অফিশিয়াল পেজে প্রোডাক্টটি দেখে নিন।
অথেনটিক কসমেটিকসগুলোতে বিশেষ করে যেগুলো ম্যাট সেগুলোতে কোনরকম অহেতুক স্ট্রং স্মেল এবং স্পার্কেল থাকে না। অন্যদিকে ক্রিমি কসমেটিকসগুলোর উপাদানগুলো আলাদা হয়ে যায় না। ফেক লিপস্টিকগুলো দেখতে কম অ্যাট্রাকটিভ এবং কোন না কোন খুঁত থাকবে। যদি মাশকারার কথা বলি তাহলে জেনুইন ডিজাইনার মাশকারা খুব হালকা সুগন্ধের হয়ে থাকে। যেকোনো কসমেটিকস প্রোডাক্ট যদি বাজে গন্ধ অথবা হেভিলি পারফিউমড হয়ে থাকে তবে বুঝে নিতে হবে যে সেটা ফেইক।
নকল পণ্যের শেপেও থাকে কিছু সমস্যা
নকল প্রোডাক্টের শেপেও বেশিরভাগ সময় সমস্যা থাকে। কাজেই প্রোডাক্ট কিনবার আগে সাইজ, শেপ দেখে কিনুন। ডি-ফর্মড বা একটু বাজে অবস্থা রয়েছে এমন প্রোডাক্ট এড়িয়ে চলুন। আইশ্যাডো এবং ব্লাশ কেনার সময় টেস্টার ব্যবহার করবেন অবশ্যই। রিয়েল কসমেটিকসগুলো দিনের বেলায় সরে যায় না। জেনুইন লিপস্টিকগুলো স্মুদলি এবং ইভেনলি ঠোঁটে লেগে যায়। ভালো মানের মাশকারাগুলো দেওয়ার পর গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে পরে না। প্রোডাক্ট কেনার আগে কন্সিস্টেন্সি (ঘনত্ব) দেখে কিনুন। খুব বেশি ঘন বা পাতলা কিনা দেখুন। স্কিনের সাথে ভালোভাবে মিক্স না হলে প্রোডাক্ট কেনা থেকে বিরত থাকুন।
সূত্র: ইত্তেফাক