জীবননগর দলিল লেখক সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন সমিতির সভাপতি নুুরুল ইসলাম। এয়াড়া তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুনীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, জীবননগর দলিল লেখক সমিতির বেশ কিছু অসাধু সদস্যরে সাথে যোগ সাজে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সাব রেজিস্টারের নাম করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে নুরুল ইসলাম।
এদিকে স্থানীয়দের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম ক্ষমতাশীন দলের নেতা হওয়ার ফলে প্রকাশ্য এ চাঁদা আদায় করছে এবং নিজের অপকর্ম ধামাচাঁপা দেওয়ার জন্য স্থানীয় ক্ষমতাশীন দলের কিছু নেতাকর্মি ও কিছু সাংবাদিককে ম্যানেজ করে চলেন তিনি।
জমি খারিজ করতে দেওয়া প্রতারণার শিকার উপজেলার হাসাদহ ইউনিয়নের তারনিবাশ গ্রামের জহির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমি জমি খারিজের জন্য যায় সেখানে আমার কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়েছে আমি টাকা কম দিতে চাইলে ওষান থেকে একজন মুহুরি বলে আপনার এখান থেকে সমিতির টাকা দিতে হবে সাব রেজিস্টারের টাকা দিতে হবে এ জন্য একটু বেশি খরচ হচ্ছে। এই বলে আমার নিকট থেকে টাকা দাবি করলে আমার কাছে অত টাকা না থাকায় সেখান থেকে চলে আসি।
ভ’মি অফিস সুত্রে জানা গেছে,জমি খারিজ করতে গেলে সরকারি নিয়মনুযায়ী ১ হাজার ১’শ ৫০ টাকা খরচ লাগে।
কিন্তু জীবননগর দলিল লেখক সমিতির নাম করে সেখানে নেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। শুুধু তাই নয় দলিল লেখক সমতিরি সভাপতি নুরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সেখানে একটি প্রতারনার আকড়া এবং সাধারণ মানুষের হয়রানি করার জন্য সাবরেজিস্টি অফিসের সামনে টেবিল চেয়ার বসিয়ে দাওয়া খানা তৈরি করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাবরেজিষ্টারের অফিসের সামনে দলিল লেখক সমতিরি এক সদস্য চেয়ার, টেবিল পেতে বসে আছেন। ওই খাতায় দলিল এন্টি না হলে কোন দলিল সাবরেজিষ্টারের কাছে দেওয়া হয় না। খাতায় দেখা গেছে সেখানে কোন সদস্যর দলিল তার নামের সংক্ষিপ্ত অক্ষর দিয়ে এন্টি করা হয় এবং দলিল হিসাব করে সমিতির ভাগের টাকা সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের নিকট দিয়ে আসতে হয়। সেগুলো আবার সপ্তাহ শেষে সকল সদস্যদের মাঝে ভাগাভাগি করা হয় বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক দলিল লেখক সমিতির এক সদস্য বলেন, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি তো আর একা টাকা খাই না। আমরা যদি টাকা বেশি করে না নিই তা হলে। ১ লক্ষ টাকার দলিল প্রতি সাবরেজিস্টারের ৮’শ টাকা ফটো কপি খারিজ হলে ৫’শ টাকা রেকড ফটো কপি হলে ৫’শ টাকা হেবা দলিল হলে খারিজ না থাকলে ২হাজার ৫’শ এবং স্থানীয নেতাকর্মি তা ছাড়া প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কি ভাবে ম্যানেজ করবো এবং তাদের কি ভাবে টাকা দিবো আমরা তো আর বাড়ি থেকে টাকা এনে দিবো না। তাই এখানে জমি খারিজের জন্য টাকা বেশি নেওয়া হয়।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারি ফিস ১ লক্ষ টাকার দলিলে ব্যাংকের মাধ্যমে পে-অর্ডার করা লাগে ৭৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা সেখানে সমিতির নাম করে নেওয়া হয় ১২ হাজার টাকা, পৌর সভার মধ্যে ১ লক্ষ টাকার দলিল হলে সরকারি ফিস ৮ হাজার থেকে ৮ হাজার ৫’শ টাকা সেখানে সমিতির নাম করে নেওয়া হয় ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা তা ছাড়া নেতার নাম করে সভাপতি নুরুল ইসলাম দলিল প্রতি ৩’শ টাকা সাংবাদিকদের নাম করে দলিল প্রতি ১৫০ টাকা।
তথ্যনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক রায়হান উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নাম করে ৫ হাজার টাকা তুলে নিজের পকেটে রাখেন।
জীবননগর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি কোন টাকা আত্বস্বাত করিনি তা ছাড়া আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পন্ন মিথ্যা।
জীবননগর সাব-রেজিষ্টার অফিসার মাসুদুর রহমান বলেন, এখানে সমিতির বিষয়টি আমি বলতে পারবো না। তবে সরকারি নিয়মনীতির মধ্যেই আমি কাজ করে থাকি সরকারি নিয়মনীতির বাইরে আমি কোন কাজ করি না আর আমি কোন অতিরিক্ত টাকা গ্রহন করিনি আমার নামে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পন্ন মিথ্যা।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকারি যে নিয়ম আছে সে অনুযায়ী জমি খারিজ করা হয়। তা ছাড়া এখন সব অনলাইনের মাধ্যমে কাজ করা হয়। এখানে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নাই এবং সরকারি যে ফিস আছে সে টাকাই নেওয়া হয় ।অতিরিক্ত কোন টাকা নেওয়া হয় না।
তা ছাড়া কেউ যদি সরকারি ফিস বাদে টাকা নিয়ে থাকে তা হলে অভিযোগ পেলে তদন্ত পুর্বক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেপ্র/আরপি