দর্শনা কেরুজ চিনিকলে অভিনব কায়দায় আধুনিকায়ন করণের কাজের রড চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ কমিটির তদন্তের নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও শেষ হয়নি তদন্ত।
জানাগেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টারীর অধিনে দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোং (বাংলাদেশ) লিমিটেডের আধুনিকায়ন (বিএমআর) কাজ চলছে।
এ কাজের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ইনচার্জ কুষ্টিয়ার জনৈক নাসির উদ্দিন। সেই সাথে কাজের সুপারভাইজার হিসাবে দায়িত্ব পালনে রয়েছে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের বড় দুধপাতিলা (দর্শনা হটাৎপাড়া সংলগ্ন) গ্রামের সবুর বাবুর্চির ছেলে রেজা।
সম্প্রতি কাজের স্থলে একটি পাওয়ারট্রলির পাটাতনে উপর আরেকটি প্লেটসিট বসিয়ে তাতে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত রড চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় কেরুজ নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যদের হাতে পাকড়াও হয় দর্শনা ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে চালক হাবিব।
এসময় নিরাপত্তাকর্মীদের হাত থেকে কৌশলে ভো-দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায় পাওয়ারট্রিলার চালক হাবিব। এ চুরির ঘটনায় নড়েচড়ে বসে কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার পর থেকে চোরকে বাঁচাতে কাজের সাইডের সুপারভাইজার রেজা বিভিন্ন মহলে শুরু করে দৌড়ঝাপ। তাতে কেরুজ চিনিকলের কর্তৃপক্ষ সহ কর্মকর্তাদের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়।
ঘটনার দিন দিবাগত রাত ১১টার দিকে কেরুজ চিনিকলের প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা গোপন সংবাদে জানতে পারে চিনিকলের আধুনিকায়ন কাজে নিয়োজিত সুপারভাইজার রেজার বাড়ি থাকা চোরায় রড, প্লেনসিড ও এ্যাঙ্গেল সহ অন্যান্য চুরিকৃত মালামাল অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে কেরুজ নিরাপত্তা বিভাগের সিকিউরিটি ইন্সপেক্টর মুজাহিদুল ইসলামের নির্দেশে নিরাপত্তা বিভাগের হাবিলদার কলিমুল্লাহর নের্তৃত্বে সঙ্গীয় নিরাপত্তা সদস্যদের নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের বড় দুধপাতিলা গ্রামের (দর্শনা হটাৎপাড়া সংলগ্ন) বাড়িতে।
এসময় রেজার সরিয়ে রাখা কিছু মালামাল তার বাড়ির সামনের জনৈক্য জিনারুল ও পিছনে মইদুলের বাড়িতে তল্লাসী করে চুরিকৃত ২২পিচ রড ও ৩টি প্লেনসিড উদ্ধার করে।
ঘটনার পর থেকে রড চুরির সাথে জড়িত পাওয়ারট্রিলার চালক হাবিব ও সুপারভাইজার রেজাকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠে ইনচার্জ নাসির উদ্দিন।
এদিকে কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ ঘটনার পর দিন কেরুজ চিনিকলের কমার্শিয়াল বিভাগের বদরুল আলমকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
এ তদন্ত কমিটি ৩ কর্মদিবসে ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হলেও তদন্তের কার্মদিবস অতিবাহিত হলেও প্রতিবেদন শেষ করতে পারেনি।
যেখানে দিনের আলোয় চুরির ঘটনা হাতেনাতে ধরা পড়া পাওয়ারট্রিলারের পাটাতনের উপর একটি প্লেনসিড বসিয়ে অভিনব কায়দায় লুকায়িত স্থানে থাকা রড সহ ধরা পড়া মালামাল সহ আটক মালামাল নিরাপত্তাকর্মীদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। কিন্তু সেই তদন্ত প্রতিবেদন দিতে তদন্ত কমিটির নির্ধারিত কর্মদিবসেও দিতে ব্যর্থ হওয়ার হেতু কি?
আসলে তদন্ত কমিটি প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে নাকি আড়াল করতে এই কালক্ষেপন জনমনে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন? তবে প্রতিবেদনে শেষ পর্যন্ত কারপক্ষে দাড়াবে তাই এখন দেখার অপেক্ষায়।
এবিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান বদরুল আলম বলেন, অনেক কঠিন কাজ। এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে এখনো ১/২ দিন সময় লাগবে।