প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে প্রেক্ষিতে নেপালের প্রেসিডেন্ট দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি দেশে নতুন করে মধ্যবর্তী নির্বাচনের তারিখও ঘোষণা দেন।
রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ৩০ এপ্রিল প্রথম দফা এবং ১০ মে দ্বিতীয় দফায় ভোট নেওয়া হবে।
তবে ওলির দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি) একটা অংশসহ সংবিধান বিশেষজ্ঞরা এ সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে অভিহিত করেছেন।
নেপালের সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়, গতকাল সকালে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। সেখানে তিনি বলেন, তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। তাই পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হোক। এর আগের দিন শনিবার দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন তিনি।
দ্য কাঠমাণ্ডু পোস্ট, হিমালয়ান টাইমসসহ নেপালের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, সাংবিধানিক পরিষদ আইনের অধ্যাদেশের বিষয়টি নিয়ে চাপ বাড়ছিল কে পি শর্মা ওলির ওপর। গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারিকে দিয়ে সেটি সইও করিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।
এছাড়া তার নিজ দলের দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধিতাও চরমে পৌঁছেছিল। বিবদমান দুটি পক্ষের একটির নেতৃত্বে আছেন প্রধানমন্ত্রী ও দলের চেয়ারম্যান ওলি। অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড।
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি) নেতা বিষ্ণু রিজাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। তাই পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করেছেন তিনি।
সাংবিধানিক পরিষদ আইনটি প্রধানমন্ত্রী ওলিকে বৈঠক ডাকা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বড় ক্ষমতা দিয়েছিল। কোরাম পূর্ণ হওয়া তো দূরের কথা, মাত্র তিনজন সদস্যের উপস্থিতিতে তিনি সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী হয়েছিলেন। তাঁর ডাকা গতকালের জরুরি বৈঠকেও মন্ত্রিপরিষদের সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন না।
এনসিপির মুখপাত্র নারায়ণকাজি শ্রেষ্ঠা বলেন, ‘পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তড়িঘড়ি নেওয়া হয়েছে। কেননা আজকের (গতকাল) বৈঠকে সব মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না। এটা গণতান্ত্রিক রেওয়াজের বিরোধী এবং এ ধরনের সিদ্ধান্ত জাতিকে পেছনে ঠেলে দেবে। এটা বাস্তবায়ন হতে পারে না।’
এনসিপির আরেক নেতা মাধব নেপালও বলেন, ‘পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি অসাংবিধানিক। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত।’
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২০২২ সালে দেশটিতে পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস