গেল বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবারও কুষ্টিয়ার কৃষকরা পাট চাষ করেছে। তবে পাটের ভালো দাম না পাওয়া্য় হতাশ কুষ্টিয়ার চাষীরা। এছাড়াও অতি বর্ষনে এবারে ফলন তেমন একটা হয়নি।জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এখন চলছে পাট জাগ দেওয়া ও ধোঁয়ার কাজ।
কৃষকরা জানান, কয়েক বছর আগেও দাম পড়ে যাওয়ায় চাষিরা পাট চাষ ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে গত দুই-তিন বছর ধরে পাটের দাম ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবারেও পটের ফলন ভালো হলেও শেষের দিকে অতিমাত্রায় বৃষ্টিপাতের কারনে ফলন কমেছে।
দৌলতপুর উপজেলার পাটচাষী আলতাব জানান, এবারে তিনি ১৫ বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছেন। বিঘাপ্রতি ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।পাটের বর্তমান বাজার ১৫শ থেকে ১৭শটাকা পর্যন্ত।এই দামে পাট বিক্রি করলেও হয়তোবা আমার খরচটা উঠে আসবে। যদি বাজার দর আড়াই হাজার টাকা হতে তাহলে বেশ লাভবান হতো বলেও জানান তিনি।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের হাজরাহাটি এলাকার চাষি আব্দুল্লাহ বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। পাট এখনো শুকানো হয়নি।তবে বর্তমান বাজার দর ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮শ টাকা মণ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।তবে লোকসান না হলেও লাভের মুখ আর চোখে দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় পাট অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২ হাজার ২৭৮ একর জমিতে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া সদরে ৬ হাজার ৭৯২ একর, কুমারখালীতে ১২ হাজার ৩২৫ একর, খোকসায় ১০ হাজার ৬২১ একর, মিরপুরে ১৭ হাজার ৯২ একর, ভেড়ামারায় ৮ হাজার ৭০৬ একর এবং দৌলতপুর উপজেলায় ৪০ হাজার ৯৭৭ একর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মামুন-অর-রশিদ বলেন, ‘আমরা জেলার প্রায় এক হাজার ৮০০ পাট চাষিদের প্রণোদনা প্রকল্পের মাধ্যমে পাট বীজ, রাসায়নিক সার দেয়া হয়েছে। মূলত পাটের দাম ভালো হওয়ায় চাষিরা পাট চাষে বেশি আগ্রহী হয়েছেন।’
কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ রঞ্জন কুমার জানান, এ বছর কুষ্টিয়া জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৪ হাজার ২৩৫ একর জমি। কিন্তু জেলার ৬টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে মোট পাটের আবাদ হয়েছে প্রায় ৯৬ হাজার ৫১৩ একর জমিতে।