ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু-দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সুফিয়া খাতুন (৬০) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছে। ঘটনাটি গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার ৬নং সারুটিয়া ইউনিয়নরে ভাটবাড়িয়া গ্রামে। নিহত বৃদ্ধা ভাটবাড়িয়া গ্রামের জালাল উদ্দিনের স্ত্রী। এ সময় আরো ৫ জন আহত হয় বলে জানা যায়। ঘটনা সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৩ ব্যক্তিকে আটক করেছে। সংঘর্ষকারীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থক বলে জানান গ্রামবাসীরা।
স্থানীয়রা জানান, ৬ং সারুটিয়া ইউনিয়নে দীর্ঘদিন যাবত বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মামুন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জুলফিকার কায়সার টিপুর মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
এ বিরোধের জের ধরে গ্রামে টিপু সমর্থক আজিবর মেম্বর ও মামুন সমর্থক আফজাল বিশ্বাসের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে মামুন গ্রুপের সমর্থকরা গতকাল সোমবার ভোরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের বাড়ীতে হামলা চালায়। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় জালাল উদ্দিনের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত হন আরো ৫ ব্যক্তি।
ঝিনাইদহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ৬নং সারুটিয়া ইউনিয়নের ভাটবাড়িয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় সুফিয়া খাতুন নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে বলে তিনি জানান। এছাড়াও হত্যা পরবর্তী আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অপর দিকে, গত বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার সারুটিয়া ইউনিয়নের বৃত্তিপাড়া গ্রামে হামলার শিকার হয়ে মকলেছুর রহমান ওরফে পাইলট (৫০) নামে আরো এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তি বৃত্তিপাড়া গ্রামের মৃত আনসার খন্দকারের ছেলে। গতকাল সোমবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সকালে সারুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী জুলফিকার কাইসার টিপুর কর্মী সমর্থকরা বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুনের কর্মীদের বাড়ীতে হামলা চালায়। হামলায় ১৫টি বাড়িঘর ভাংচুর ও ৭ জন আহত হয়। আহতদের শৈলকুপা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে গুরুত্বর আহত মকলেছুর রহমান ওরফে পাইলটকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুরে তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
সারুটিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুন জানায়, প্রতিপক্ষ জুলাফিকার কাইসার টিপুর নেতৃত্বে তার লোকজন গত বৃহস্পতিবার সকালে ব্রক্ষ্মপুর, পুরাতন বাখরবা ও বৃত্তিপাড়া গ্রামে হামলা চালায়। হামলায় প্রতিপক্ষরা তার সমর্থকদের ১৫টি বাড়ি ও দোকান এবং মোটসাইকেল ভাংচুর করে। এছাড়াও হামলাকারীরা লুটতরাজ চালায়। হামলাকারীরা মহিলাসহ ৭ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে।
আহতদের মধ্যে মকলেছুর রহমান ওরফে পাইলটের অবস্থায় আংশকাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সোমবার দুপুরে তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন বলে জানা গেছে। মৃত ব্যক্তি বর্তমান চেয়ারম্যান একনিষ্ট কর্মী ছিলেন বলে তিনি দাবী করেন।
তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবারের অতর্কিত হামলার ঘটনায় ৩০ জনকে আসামী করে শৈলকুপা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছিলো।
শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানায়, আহত ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। লুটপাট ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বৃত্তিপাড়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।