আগামী ১২ নভেম্বর রবিবার সনাতন সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শ্যামাপূজা ও দীপাবলী। এইদিন থেকে চতুর্থপর্বের অবরোধ এর ডাক দিয়েছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। অবরোধ চলবে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত। পূজার্থীদের নির্বিঘ্নে চলাচল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে এ দিনটিতে ডাকা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্যে বিএনপিসহ সকল বিরোধী দলীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
এর আগেও লক্ষীপূজা এবং বৌদ্ধদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমার দিন ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হলেও তারা শোনেনি। এসময় বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের নেতারা বলেছিলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণার কারণে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন দূরদূরান্ত থেকে বৌদ্ধ বিহারে উৎসবে অংশ নিতে নানা বাঁধা-বিঘ্নতার সম্মুখীন হবে। ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ভয়বহ সহিংস রূপ নিলে রাজধানীতে কোন উৎসব করতে পারেনি তারা।
শুক্রবার ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত এক বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বিরোধী দলসমূহ ঐক্য পরিষদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রবিবার অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন।’ তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সংগঠনগুলো ধর্মীয় এইসব উৎসবের দিনগুলো বিবেচনায় নিয়ে সম্মান জানানো উচিত বলে আমি মনে করি। গত ২৮তারিখ অনুরোধ তারা রাখেনি। আশা করছি রবিবারেরটা তারা রাখবেন, অবরোধ পিছিয়ে দিবেন।’
ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ইতিহাস বলছে, বাংলাদেশে বিএনপি জামায়াত কখনোই সংখ্যালঘুদের কোন অধিকারের বিষয়ে ছাড় দেয়নি। তারা কখনোই দেশের কোন সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর দাবি সংবেদনশীলতার সঙ্গে বিচারে নেয়নি। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব বলছে, ১৯৯৬, ২০০১ বা তার আগের প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক পরের বছরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা বেশি ছিল। শুধু ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যায় ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর। ১৯৯৬ এর নির্বাচনের বছরে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২১৪টি, পরের বছরে ৫৫৪টি । ২০০১ সালে ধর্ষণের ঘটনা ৫৬৬টি হলেও পরের বছরে তা দাঁড়ায় ১ হাজার ৯১টিতে। ২০১৪ সালে নির্বাচনের বছরে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে ৫৪৫টি, পরের বছরে এ সংখ্যা ছিল ৬৯০। ২০১৮ সালে নির্বাচনের বছরে ধর্ষণের ঘটনা ৫৫৬টি, পরের বছরে তা দাঁড়ায় ১ হাজার ৯৭টিতে।