ভারতের মেঘালয় ও আসামে ক্রমাগত বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়ে ইতোমধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রংপুর ও কড়িগ্রাম জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
সিলেটের সাথে সারাদেশে সকল ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। আকাশপথ, রেলপথ, সবশেষে সড়ক পথের যোগাযোগও। নিরাপত্তাজনিত কারণে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্কও বন্ধের পথে। সিলেট বিভাগের ৮০ ভাগ এখন পানির নিচে। এক করুণ অবস্থায় সিলেট বিভাগের মানুষ।
সিলেট, সুনামগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় বন্যার কারণে সারা দেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
উজান থেকে নেমে আসা পানিতে চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেট অঞ্চলে। এর আগে গত এপ্রিলে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে অসময়ে বন্যা দেখা দেয়। এরপর মে মাসের মাঝামাঝিতে সিলেটে ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়।
প্রতিবছরই বন্যা আসে প্রাকৃতিক নিয়মে। কিন্তু দেশের নদ-নদীগুলোর এখন যে অবস্থা, তাতে অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত হয়ে সাগরে যেতে পারছে না। বেশির ভাগ নদী ভরাট হয়ে গেছে। গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় পানি ধরে রাখার ক্ষমতা হারিয়েছে অনেক নদী। সে কারণে যতই দিন যাচ্ছে বন্যার স্থায়িত্ব ও ভয়াবহতা বাড়ছে।
সরকারি, বেসরকারি, এনজিও, বিভিন্ন সংগঠন বন্যার্তদের সহযোগীতায় যে যার মত এগিয়ে এসেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যা মোকাবেলায় এসকল ত্রাণ সামগ্রী খুবই অপ্রতুল। বন্যা নিয়ন্ত্রণে এখনই স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে আপাতত দাঁড়াতে হবে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে। পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের সব প্রান্ত থেকে যার যার সাধ্যমত বন্যার্তদের পাশে দাড়াতে হবে। বন্যাকবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধসহ মেডিক্যাল টিম পাঠাতে হবে।