বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ৩৭০ শয্যার অত্যাধুনিক পূর্ণাঙ্গ করোনা সেন্টার চালু করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে যারা কিডনি, হার্টসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভোগার পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তারা এখানে পাবেন উন্নতমানের চিকিত্সা সেবা। বিএসএমএমইউয়ের প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. রফিকুল আলমের তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও রেসপিরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সমন্বয়ে গঠিত টিম সেবা প্রদানে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে এই করোনা সেন্টারে।
৩৭০ শয্যার মধ্যে ‘কেবিন ব্লকে’ শয্যার সংখ্যা ২৫০টি এবং ‘বেতার ভবনে’ শয্যার সংখ্যা ১২০টি। ‘কেবিন ব্লকে’ এর মধ্যে ইমার্জেন্সি রোগীদের জন্য রয়েছে ২৪টি শয্যা এবং আইসিইউ শয্যাসংখ্যা হলো ১৬টি। করোনা স্বাস্থ্যসেবায় কেবিন ব্লকে ‘সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট’ স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া রোগীদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলা, নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেটর, যেমন- সি-প্যাপ, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ইত্যাদি স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি শয্যায় রয়েছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপোর্টসহ অন্যান্য চিকিত্সা সুবিধা। মূলত গুরুতর অসুস্থ রোগীরাই এখানে ভর্তি হবেন। অন্যদিকে বেতার ভবনের ১২০ শয্যায় ভর্তি হবেন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মডারেট রোগীরা। ৩৭০ শয্যার মধ্যে ১২০ আইসোলেশন বেড রয়েছে। বিএসএমএমইউয়ের করোনা সেন্টারে শনিবার থেকে রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
প্রতিদিন তিনটি শিফটে ৬০ চিকিত্সক, ১০০ জন নার্স এবং সংশ্লিষ্ট প্যারামেডিক্স, ওয়ার্ডবয়, এমএলএসএসসহ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মীসহ মোট ২৬০ জন জনবলের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী টিম রোগীদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। করোনা সেন্টারে এই চিকিত্সাসেবা প্রদান ও রোগী ভর্তি কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকবে।
দেশে বর্তমানে চিকিত্সায় উচ্চশিক্ষা প্রদান করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। দেশের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে আইপিজিএমআরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন বিষয়ে এমডি, এমএস, এমফিল ইত্যাদি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান শুরু হয়। তাই যেকোনো জটিল রোগীরা এখানে সুচিকিত্সা পাবেন।
এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন বিএসএমএমইউয়ে করোনা সেন্টার চালু হোক। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বল্প সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ করোনা সেন্টার চালু করেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া জানান, বিএসএমএমইউয়ের করোনা সেন্টারে রোগীরা সুচিকিত্সা পাবেন। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে টিম গঠন করা হয়েছে। যাদের মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের প্রয়োজন হবে তাদের জন্য এই বোর্ড গঠন করা হবে। আর করোনা রোগীদের জন্য বাড়তি কোনো খরচ নির্ধারণ করা হয়নি। সাধারণ ও গরীব রোগীদের জন্য আগের নিয়ম বহাল থাকবে।
সূত্র- ইত্তেফাক