মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০টি জুনিয়র কনসালটেন্ট (বিশেষজ্ঞ) চিকিৎসকের পদ থাকলেও সব কটি পদই শূন্য রয়েছে। শুরু থেকে আজ অবদি শুন্য পদে বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের পদ শুন্যই রয়ে গেছে। চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে জনগনের কাংখিত চিকিৎসা সেবা। কমপ্লেক্সেটির একটি আধুনিক ভবন নির্মিত হলেও চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ জনগন। এখানে আধুনিক ও সুসজ্জ্বিত অপারেশন থিয়েটার থাকলেও অপারেশন বন্ধ পাঁচ বছর ধরে। সাব সেন্টার থেকে চিকিৎসক এনে আউটডোরে ও জরুরী বিভাগের সেবাটি চালু রাখা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলছে, সব সংকট কাটিয়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গাংনী উপজেলার সাড়ে তিন লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০০৮ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শষ্যায় উন্নীত করা হয়। সে লক্ষ্যে ২০১৮ সালে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। এখানে মোট ডাক্তারের পদ ৩০ টি। এর মধ্যে ১০ টি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ রয়েছে। পদ গুলির মধ্যে রয়েছে, জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, সার্জারি, চর্ম ও যৌন, মা ও শিশু, এনেস্থেসিয়া, গাইনী, চক্ষু, অর্থপেডিক্স ও কার্ডিওলজি । বিশেষজ্ঞ পদ পুরুণ হয়নি দীর্ঘদিনেও। ইমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসারের পদটি শুণ্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্মলগ্ন থেকে। ইনডোর ও আউটডোর সেবাটি সেকমো (সাব অ্যাসিস্ট্যান্স কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার) ও সাব-সেন্টারের চিকিৎসক দিয়ে চালানো হচ্ছে। সব ধরণের অপারেশন করার জন্য বরাদ্দ দেয়া একটি সুসজ্জিত রুম। দেয়া হয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি। আছে প্রশিক্ষিত নার্স। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন ডাক্তার বাইরের ক্লিনিকে অপারেশন করেন। অথচ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে তাদের দিয়ে অপারেশন করানো হয় না। ফলে নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। চিকিৎসা বঞ্চিত আব্দুল বারিউল ইসলাম জানান, তার বোনকে নিয়ে এসেছিলেন ডেরিভারি করানোর জন্য। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকা এবং অপারেশন না করানোয় স্থানীয় ক্লিনিকে ১২ হাজার টাকায় অপারেশন করানো হয়। অপারেশনের ডাক্তার থাকলে ক্লিনিকে গিয়ে মোটা টাকা গুনতে হতোনা তাদের। বামুন্দ্রি গ্রামের জাহানারা বলেন, আমি আমার মেয়েকে সিজার করাতে নিয়ে আসি অপারেশন ডাক্তার না থাকায় বাধ্য হয়ে ক্লিনিয়ে গিয়ে সিজার করাতে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে আমাদের কিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করলে আমাদের মত হাজারো গরিব মানুষ উপকৃত হবে। মটমুড়া গ্রামের তাহাজ আলী বলেন,মেহেরপুর জেলার প্রাণকেন্দ্র গাংনী উপজেলা। এখানে দশটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও একটিও নেই। এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। আমাদের চিকিৎসা নিতে দুরদুরান্তে ছুটতে হচ্ছে। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সব গুলি না হলেও অন্তত কিছু সংখ্যক নিয়োগ দিয়ে আমাদের সেবা নিশ্চিত করা হোক। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদুল হাসান শাওন বলেন, ইতোমধ্যে তিনি ডাক্তার সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ডাক্তার সংকট কাটিয়ে উঠলে অপারেশনের ব্যবস্থা করা হবে। তবে কয়েকদিন আগে এখঅনে একজন এনেস্থেসিয়া পদের জন্য পোস্টিং হয়েছে। একজন সার্জারি চিকিৎসক পেলেই অপরাশেন চালু হবে।