বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দুই মাসে (গত ২৬ এপ্রিল থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত) ভারতে আটকেপড়া ৫ হাজার ৬শ‘ ৬৬ জন বাংলাদেশি যাত্রী ফেরত এসেছেন। এর মধ্যে ১শ‘২৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। আর ভারত থেকে করোনা সংক্রমণ (পজিটিভ) নিয়ে এসেছেন ১৩ জন বাংলাদেশী যাত্রী। একই সময়ে ভারত থেকে এসেছে ৩৪ জনের মৃতদেহ। চিকিৎসা নিতে গিয়ে এসব বাংলাদেশীরা ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে মারা যান। সর্বশেষ শনিবার (২৬ জুনবেলা ১২টা পর্যন্ত) দেশে ফিরেছেন ৫৭ জন যাত্রী। কোয়ারেন্টাইনে অবস্থানকালীন অন্যান্য দুরোরোগ্য রোগে মারা গেছেন ৪ জন।
কলকাতার বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশন থেকে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) এবং করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ নিয়ে ভারতে আটকেপড়া যাত্রীরা বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন দিয়ে দেশে ফেরত আসা শুরু করেন।
বেনাপোল, ঝিকরগাছা ও যশোরের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬শ‘৮১ জন। যশোরের বাইরে অন্যান্য জেলায় আছেন ১১ জন। এদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইন শেষে বাসায় ফিরে গেছেন ৪ হাজার ৪শ‘ ১৩ জন। করোনা পজিটিভ ২শ‘ ৭ জনকে যশোর ২৫০ শষ্যা বিশিস্ট জেনারেল হাসপাতালের ডেডিকেটেড ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। যশোরের বাইরে অন্য হাসপাতালের করোনা জোনে পাঠানো হয়েছে ২৭৭ জনকে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, বাংলাদেশ সরকার ভারতের করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট সংক্রমণ রোধে ২৬ এপ্রিল থেকে ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে করে ভারতে আটকা পড়ে কয়েক হাজার বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রী। সেসব আটকা পড়া পাসপোর্ট যাত্রীদের নিজ দেশে ফিরতে হলে কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশন থেকে এনওসি নিয়ে ও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরটিপিসিআর ল্যাবের করোনা টেস্টের সনদ নিয়ে দেশে ফেরার নির্দেশনা দেন বাংলাদেশ সরকার। যেসব যাত্রী করোনায় আক্রান্ত বা উপসর্গ নিয়ে দেশে ফিরছেন উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের তত্বাবধানে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ডেডিকেটেড ইউনিটে পাঠানো হচ্ছে।
যশোরের জেলা প্রশাসক মোঃ তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ভারত থেকে দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশি যাত্রীদের তাৎক্ষণিকভাবে আমরা চেকপোস্টে স্বাস্থ্য কর্মীদের দিয়ে করোনা টেস্ট করানোর পর স্থানীয় কয়েকটি আবাসিক হোটেল, ঝিকরগাছার গাজির দরগাহ মাদ্রাসা ও যশোরের বিভিন্ন হোটেলে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়।
এছাড়াও সাতক্ষীরা, খুলনা, নড়াইল, ঝিনাইদহ ও মাগুরার বিভিন্ন হাসপাতালে ভারত ফেরত যাত্রীদের রাখা হয়। ভারত থেকে আসা ৫৬৬৬ জনের মধ্যে পজিটিভ ১২৩ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। তাদের নির্ধারিত আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এছাড়াও ২৬ জুন পর্যন্ত ৪৪৩১ জনকে নিজ নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভারত থেকে আগত বাংলাদেশী সকল যাত্রী ও করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।