হাতে সময় কোথায়? খাওয়া-দাওয়ার সময়টাই হাতে নেই, ব্যায়াম তো পরের ব্যাপার। এমন ভাবনা থাকলে বুঝে নিতে হবে ব্যায়ামের ক্ষেত্রে আপনি গুরুত্ব দেন কম। তবে আমাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততায় অনেক কিছুতেই ব্যায়ামের মতো কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারি। কাজগুলো আপনার ব্যস্ত শিডিউলের সঙ্গেই মানিয়ে ফেলা সম্ভব। কাজের দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও অনেক ব্যায়াম কার্যকর। সেগুলো হয়তো আপনি সচেতনভাবে জানেনও না। কিন্তু এগুলো আপনার প্রাত্যহিক জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ঘুম ভাঙার পর
ঘুম থেকে জেগেই ক্লাস বা অফিসে যাওয়া খুবই কষ্টকর। আলসেমিতে ভর করা নিস্তেজ শরীর আর ঘুম কাতুরে দেহকে নিয়ে তখন অনেক যুদ্ধ করতে হয়। সুতরাং সবচেয়ে ভালো হয় যদি দেহকে একটু নড়াচড়া করানো যায়, তাহলেই সকালটা সহজ হয়ে উঠবে। বিছানা থেকে ধুম করে উঠে পড়া অবশ্যই ভালো নয়। আবার ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠে তাড়াহুড়োও নয়।
ঘড়িতে অ্যালার্ম বাজার পর থেকে প্রতি মুহূর্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং বিছানায় শুয়ে না থেকে বসে পড়া উচিত। পারলে তড়িঘড়ি করে বাথরুমে যাওয়া উচিত। ক্লাস বা অফিসে যাওয়ার জন্য দ্রুত হাঁটা ও দীর্ঘ পথ বেছে নিতে দ্বিধা করবেন না। এই ছোট ছোট কাজগুলো দ্রুত করার চেষ্টা আপনার দেহকে নড়াচড়া করতে সাহায্য করবে।
বাথরুমে কিছুক্ষণ
প্রতিদিন অন্তত দুই মিনিট করে দুইবার দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এই দুই মিনিটের সর্বোচ্চ ব্যবহার করবেন না কেন? দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ব্রাশ করার পরিবর্তে ওয়াল সিট (দেয়ালের সঙ্গে পিঠ লাগিয়ে চেয়ার আকৃতি ধারণ) জাতীয় ব্যায়াম অথবা পা নানাভাবে নাড়িয়ে ব্যায়াম করা যেতে পারে। ব্রাশকালীন সময়ে দিনে দুইবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে শিগগির এর কার্যকর ফলাফল পাবেন।
সাধারণ ব্যায়াম
প্লাঙ্ক, মাউন্টেইন ক্লাইম্বারস এবং লেগ লিফটস সবগুলো ব্যায়ামই দ্রুত এবং অল্প সময়ে করা যায়। তবে মেঝেতে শুয়ে করতে হয় বলে পুরো সময়টা এক ঘেয়ে লাগতে পারে এবং কত সময় লাগবে তা নিশ্চিত করা যায় না। ব্যায়ামের কারণে পড়াশোনা ব্যাহত হবে বলে দুশ্চিন্তা হচ্ছে? তাহলে নিয়মগুলো একটু পরিবর্তন করা যেতে পারে। যেমন একজায়গায় বসেই পড়তে হবে এই নিয়মের পরিবর্তে ব্যায়ামাগারেই গাইড বা বই নিয়ে আসতে পারেন অথবা প্রয়োজনীয় অংশটুকু ফোনের মধ্যে সেভ করে রাখতে পারেন।
বিনোদনের সময় ব্যায়াম
বিনোদনের জন্য সিরিয়াল বা মোবাইলে অনেক কিছু দেখার অভ্যাস থাকে। তখন এক কাজ করুন। হাতে মোবাইল নিয়ে পায়চারি করুন। এভাবে শরীর এক্টিভ থাকবে। নড়াচড়াও হবে। বই পড়ার ক্ষেত্রেও একই কাজ করা যায়। একাডেমিক পড়াশোনার ক্ষেত্রেও এমন অভ্যাস ভালো।
লিফটের বদলে সিড়ি
আপনি কোনো ভবনে উঠতে লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি ব্যবহার করতে পারেন। ঘরে অথবা ক্লাসে যাওয়ার সময় সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার ক্ষেত্রে নিজেই নিজের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ নিতে পারেন। সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠা আর নিচে নামা আপনার দৈনন্দিন জীবনের একটা নিয়মিত ব্যায়াম হতে পারে।
পুশ আপ চর্চা
রাতের রুটিনে পুশ আপ থাকলে এটা আপনার জীবনের একটা বড় পরিবর্তন আনতে সক্ষম। পুশ আপ চর্চা কঠিন। প্রথমে চারটি করে দিন। আস্তে আস্তে মানিয়ে নিন। অভ্যস্ত করুন নিজেকে।
সূত্র: ইত্তেফাক