আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান। অক্টোবরে নির্বাচনী তফসিলও ঘোষণা হয়ে যাবে। এখন সময় নির্বাচনে কীভাবে অংশ নিবে এবং কারা সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী হবে তার হিসেব নিকেশের। সেখানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এখন এসে রোডমার্চের মতো কর্মসূচি দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করার কথা ভাবছেন। সরকার পতনের একদফা দাবি আর এই রোডমার্চ এখন সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরের কর্মসূচি। সময়ের কাজ সময়ে না করার খেসারত এর আগেও দলটিকে দিতে হয়েছে বলে মন্তব্য তাদের।
সরকার পতনের একদফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই রাজপথে আন্দোলনে আছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করতে এবার টানা কর্মসূচি দিয়েছে। কিন্তু সংগঠিত হতে পারেনি। এবার অক্টোবরকে সামনে রেখে চূড়ান্ত আন্দোলনের আগে ওয়ার্মআপ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলার নেতাদের সর্বশক্তি নিয়োগের বার্তা দেয়া হবে রোডমার্চ থেকে।
পরিকল্পনা মোতাবেক বলা হচ্ছে, পাঁচ বিভাগের পর ঢাকা বিভাগে সর্বশেষ রোডমার্চ করবে। এসব রোডমার্চ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেবে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। এনিয়ে নিজেদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির একাধিক নেতা। তারা বলছেন, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে এসব এলাকাভিত্তিক রোডমার্চ এর কথা বলা হচ্ছে কিন্তু এখন আর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সেই সামর্থ নেই যে টানা কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।
বলা হচ্ছে, তারুণ্যের রোডমার্চের পর অক্টোবরের শুরুতেই ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা আসতে পারে। সেই মহাসমাবেশ থেকে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচনের দাবি মেনে নিতে সরকারকে সময় বেধে দেয়া হতে পারে। যদিও তৃণমূলের নেতারা বলছেন, এর আগে বহুবার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল সরকারকে। সেসব কোন কাজেই আসেনি। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং তৃণমূলের কর্মীদের কাছে নানাভাবে হেয় হতে হয়েছে নেতৃত্বদের। বিএনপির তৃণমূ্লের নেতারা বলছেন, আল্টিমেটাম দিয়ে এখন আর কোন কাজ হবে না। সে সময় পেরিয়ে গেছে। বিএনপিকে এমন কিছু করতে হতো গত একবছরে যাতে করে সরকার তাদেরকে ছাড়া নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত না নিতে পারে।
এখন আর এই কর্মসূচি কোন কাজেই আসবে না উল্লেখ করে খুলনা বিভাগের এক বিএনপি নেতা বলেন, এটা আরও একবছর আগের কর্মসূচি। তখন থেকে কর্মসূচিগুলো পালন করলে এখন এসে সেটা এমন একটা জায়গায় যেতো যে সরকার প্রতিদিন টেবিলে বসতে বাধ্য হতো সমঝোতার জন্য। ফলে এই কর্মসূচি নিয়ে আমরা খুব আশাবাদী নই।
এবিষয়ে জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা এখন চাই আমাদের একদফা মেনে নিতে হবে। অক্টোবরে চূড়ান্ত আন্দোলন। তার আগে তৃণমূলকে এই চূড়ান্ত আন্দোলনের সাথী করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সময় চলে যায়নি, সময় শুরু। তবে আগামী মাসের মধ্যে বুঝা যাবে খেলা কোনদিকে এগুচ্ছে’।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলাম লেখক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ‘বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল না, এটাকে আমি বলি বিরোধী মহল। এজন্য তারা দেশবিরোধী কাজ করবেই। যারা ক্ষমতা থেকে ১৭ বছর ধরে বাইরে আছে তারা যেকোনভাবে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা করবে। ওদের কাছ থেকে এধরনের কর্মসূচি আসায় আমি বিস্মিত না। তবে আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, তারা যদি রাজনৈতিক সক্ষমতা দেখাতেই চায় তাহলে একইদিনে সব বিভাগে কর্মসূচি করে সক্ষমতা দেখাক। অন্য বিভাগ থেকে জেলা থেকে লোক জড়ো করে কর্মীদের উজ্জীবিত করার এটা অপচেষ্টা। আওয়ামীলীগ যখন বিরোধী অবস্থানে ছিলো তখন ২০০৪ সালে একইদিনে কর্মসূচি করে দেখিয়েছে। বিএনপির সেই শক্তি নেই। নির্বাচনের আগে সরকার যখন তার কাজগুলো গুছিয়ে নিয়ে এসে একের পর এক মেগা প্রজেক্ট উন্মোচন করছে তখন দেশকে অস্থিতিশীল করা বিএনপির অপরাজনীতি ছাড়া কিছু না ‘