কোক স্টুডিও বাংলার সিজন তিনের দ্বিতীয় গান ‘মা লো মা’ প্রকাশের পর লুফে নিয়েছিল এক শ্রেণির শ্রোতারা। ছাদ পেটানো গানের স্মৃতি, লোকগান ও র্যাপের মিশেলে এ পরিবেশনের ছন্দে নেটিজেনরা যখন দুলছেন তখন হঠাৎ পতন ঘটলো মিথ্যাচারের অভিযোগে।
গানটির গীতিকারের নাম নিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে। ‘মা লো মা’ গানটির গীতিকারের ঘরে খালেক দেওয়ানের নাম উল্লেখ করলেও দাবি করা হচ্ছে তথ্যটি মিথ্যা। গানটি নেত্রকোনার বাউল রশিদ উদ্দিনের লেখা।
বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাউল রশিদ উদ্দিনের জন্মস্থান নেত্রকোণার সংস্কৃতিকর্মীরা। সোমবার নেত্রকোনায় সামাজিক-সাংস্কৃতিক-সাহিত্য সংগঠনসমূহ ও সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ব্যানারে কোক স্টুডিও বাংলার বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে গানটি বাউল আব্দুল খালেক দেওয়ানের লেখা বলে প্রচারের অভিযোগ এনে মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মীরা।
কোক স্টুডিও বাংলার সদ্য প্রকাশিত ‘মা লো মা’ গানটির সংগীত পরিচালনায় ছিলেন প্রীতম হাসান। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে ব্যস্ততার অযুহাতে এড়িয়ে যান তিনি। কথা বলার সময় না দিয়েই তিনি বলেন, ‘আপনাদের যত প্রশ্ন আছে কোক স্টুডিওকে করুন। আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।’
পরে বিষয়টি নিয়ে কোক স্টুডিও বাংলা একটি বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘কোক স্টুডিও বাংলা একজন শিল্পীর সৃজনশীলতা ও মেধা সম্পদের মৌলিকত্বের গুরুত্ব অনুধাবন এবং মূল্যায়ন করে। আমাদের প্রতিটি গান সতর্কতার সাথে যাচাই করা হয় এবং ন্যায়সঙ্গত শিল্পীকে প্রাপ্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়। ‘মা লো মা’ গানটি মো. খালেক দেওয়ানের লেখা। তার বংশধর আরিফ দেওয়ান ও সাগর দেওয়ান এই গানে পারফর্ম করেছেন। ‘মা গো মা’ নামে এই গানের আরও একটি সংস্করণ আছে, যা বাউল রশিদ উদ্দিনের লেখা। গান দুটির মধ্যে বিভ্রান্তি এড়াতে ‘মা লো মা’ গানটি প্রকাশের সময়ই ইউটিউবে গানটির বর্ণনায় রশিদ উদ্দিনের নামও উল্লেখ করা হয়েছে।’
ইউটিউবে গানটির বর্ণনায় চোখ রাখলে দেখা যায় বিষয়টি পরিষ্কার করেছে কোক স্টুডিও বাংলা। সেখানে বাউল রশিদ উদ্দিনের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। লেখা হয়েছে, মা লো মা লিখেছেন মো. খালেক দেওয়ান (গানটির আরেকটি সংস্করণ লিখেছেন বাউল রশিদ উদ্দিন, নাম ‘মা গো মা’)।
গত ৩ মে কোক স্টুডিও বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে ‘মা লো মা’ গানটি। এতে কণ্ঠ দিয়েছেরন প্রীতম হাসান, সাগর দেওয়ান, আরিফ দেওয়ান ও র্যাপার আলী হাসান। গানটির সংগীতায়োজনে ছিলেন প্রীতম হাসান। প্রকাশের চার দিনে ৪১ লাখের অধিক মানুষ শুনেছে গানটি।
সূত্র: ইত্তেফাক