গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৭৩৮ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৫২ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ জন।
আজ রবিবার (৫ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা ৩৭ জন পুরুষ এবং ১৮ জন নারী। এঁদের বয়স ০ (শূন্য) থেকে ১০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৯ জন এবং ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১২ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৫২ জনের।
এ পর্যন্ত যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৬২৪ জন এবং নারী ৪২৮ জন। আর বয়স বিবেচনায় এ পর্যন্ত যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁরা ০ (শূন্য) থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ২৪ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৭০ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৫১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩১১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫৯৩ জন এবং ষাটোর্ধ ৮৯০ জন।
জানানো হয়, নতুন যে ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৩ জন, রাজশাহী বিভাগের একজন, খুলনা বিভাগের ছয়জন, বরিশাল বিভাগের পাঁচজন, সিলেট বিভাগের দুইজন এবং রংপুর বিভাগের আটজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের একজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৪১ জন এবং বাসায় ১৪ জন।
বিভাগ হিসেবে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ঢাকা বিভাগে এক হাজার ৬০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৬৩৪ জন, রাজশাহী বিভাগের ১০২ জন, খুলনা বিভাগের ৮৮ জন, বরিশাল বিভাগের ৭২ জন, সিলেট বিভাগের ৮৬ জন, রংপুর বিভাগের ৬১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৪৯ জন।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৯০৪ জন। এ নিয়ে দেশের করোনা সংক্রমণ থেকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭২ হাজার ৬২৫ জন।
ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৩ হাজার ৯৬৪টি। একই সময় পূর্বের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৯৮৮টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে দুই হাজার ৭৩৮ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আট লাখ ৪৬ হাজার ৬২টি।
সারা দেশের করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতাল সম্পর্কে তথ্যে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যার সংখ্যা ছয় হাজার ৭৫টি এবং আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১৪৯টি, সারা দেশে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১৪ হাজার ৭৭৫টি, সারা দেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৪০১টি এবং সারা দেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১ হাজার ৭৮৫টি।
আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৪৪৯ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪৮৩ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ৩০ হাজার ৮৭২ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৪ হাজার ১৫৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৭১৫ জন।
কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন দুই হাজার ৮৮৭ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৫৩৫ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট তিন লাখ ৭৭ হাজার ৩২ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ১২ হাজার ৫৩০ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৪ হাজার ৫০২ জন।
সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে এক লাখ ৬০ হাজার ৫৮৮টি। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে এক কোটি ৪৭ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৬ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্লাটফর্ম মুক্তপাঠ-এ অনলাইনে সেবা দেওয়ার জন্য মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ১৬ হাজার ৪১৪ জনে। এ ছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।