চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি মার্কিন গণতন্ত্রের ইতিহাসে ‘কালো দিন’ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এদিন অধিবেশন চলাকালীন মার্কিন আইনসভায় হামলা চালায় উন্মত্ত ট্রাম্প সমর্থকরা। সেই দিন আসলে কী হয়েছিল? হঠাৎ কীভাবে এতটা হিংসাত্মক হয়ে ওঠে পরিস্থিতি? মার্কিন গণতন্ত্রকে কলঙ্কিত করা সেই দিনের অভ্যন্তরের আসল ঘটনা নিয়ে ‘স্টর্মিং দ্য ক্যাপিটল: দ্য ইনসাইড স্টোরি’ নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছে ডিসকোভারি। সংস্থার ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখা যাচ্ছে তথ্যচিত্রটি।
ঘটনার দিন ক্যাপিটল ভবনের বাইরের উত্তেজনা দুনিয়ার নজরে এলেও ভেতরে তার কয়েকগুণ বেশি তাণ্ডবলীলা চলেছিল। যা ধরা পড়ে শুধুমাত্র একটি সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। হাই সিকিউরিটি জোনে একমাত্র উপস্থিত ছিলেন আইটিভির রবার্ট মুর, প্রযোজক সোফি আলেকজান্ডার এবং ক্যামেরাম্যান মার্ক ডেভি। ট্রাম্প সমর্থকদের আক্রোশ আর ধ্বংসাত্মক কীর্তির সাক্ষী ছিল একমাত্র ওই সংবাদমাধ্যম। ঘটনার তিন সপ্তাহ বাদে ওই ফুটেজগুলি দিয়েই তৈরি ক্যাপিটল ভবনে হামলার এই তথ্যচিত্র প্রকাশ পায়। যা দেখে আরও একবার রীতিমতো চমকে উঠেছে গোটা দুনিয়া।
তথ্যচিত্রে রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য ন্যান্সি ম্যাস ওই দিনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন, “ঘটনার দিন আমরা অফিসের ভিতর দরজা বন্ধ করে লাইট নিভিয়ে লুকিয়ে বসেছিলাম। ভয়ানক আতঙ্কের ছিল প্রতিটা মুহূর্ত। দিনটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দুঃখের।”
যুক্তরাষ্ট্রেও এমন হয়? বিস্মিত গোটা দুনিয়া। ট্রাম্পের ভাষণের পরপরই সারা বিশ্বকে সাক্ষী রেখে তার অনুগামী-সমর্থকরা যাবতীয় নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ক্যাপটল বিল্ডিংয়ে হামলা চালায়। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় ৫২ জনকে। বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসার পল আর্ভিং জানায়, ভবনের নিরাপত্তা বলয় ভেঙে ঢুকে পড়ে একদল বিক্ষোভকারী। হাতে ট্রাম্পের নাম লেখা পতাকা, মুখে ট্রাম্পের জয়ের স্লোগান। মার্কিন সংসদে তখন জো বাইডেনকে সরকারি ভাবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণার প্রস্তুতি চলছিল।
ক্যাপটাল হিলে অনাকাঙ্ক্ষিত ওই হামলায় গোটা ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রায় লকডাউন জারি করতে বাধ্য হয় মার্কিন পুলিশ। হিংসাত্মক এই ঘটনায় প্রাণ হারান পাঁচজন। এই পুরো ঘটনার দায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপরই বর্তায়। ঘটনার জেরে প্রথম এবং একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের জন্য ইমপিচ করা হয় ট্রাম্পকে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে যা নজিরবিহীন ঘটনাই বটে।