পানি বিষয়ক সমস্যা সমাধানে “পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করো”এই প্রতিপাদ্যে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সকলের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিতকরণ স্লোগানে মুজিবনগরে পালিত হয়েছে বিশ্ব পানি দিবস।
বুধবার সকালে উপজেলার মানিকনগর গ্রামে ওয়েব ফাউন্ডেশন মুজিবনগর শাখা এর আয়োজনে, দিবসটি পালন উপলক্ষে র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালী ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন,মুজিবনগর উপজেলা প্রকৌশল অফিসের উপ সহকারী প্রকৌশলী সিহান হোসেন,ওয়েভ ফাউন্ডেশন এর প্রকল্প সমন্বয়কারী (অ্যাক্সিস প্রকল্প) শাহেদ জামাল, ওয়েভ ফাউন্ডেশন এর ফিল্ড মনিটর নাহিদ ফাতেমা,ওয়েভ ফাউন্ডেশন এর মুজিবনগর ইউনিট ম্যানেজার ইনারুল ইসলাম,ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সি,ডি,ও-২ আব্দুল মতিন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পৃথিবীব্যাপি সুপেয় পানির সংকট ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।বর্তমানে দেশের প্রায় সকল স্হানে সুপেয় পানির সংকট রয়েছে। উপকূল অঞ্চলের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত লবনাক্ততা রয়েছে। বরেন্দ্র অঞ্চল, পাহাড়ী অঞ্চল খরাপ্রবণ অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে, ফলে বছরের সব সময় যথেষ্ট পানি পাওয়া যায় না। পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক ও আয়রন দেখা যাচ্ছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য বিপদজনক। এছাড়া পানিতে অদৃশ্য ভাইরাসেরও অস্তিত্ব রয়েছে, যা থেকে প্রতিদিন ডায়রিয়া, আমাশয়ের শিকার হচ্ছে অসংখ্য শিশু,নারী ও পুরুষ।
এ সংকট মোকাবেলা করে সকলের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত হওয়া জরুরী। সারা বিশ্বের মানুষকে সচেতন ও উদ্যোগী করার জন্য জাতিসংঘ ১৯৯৩ সাল থেকে বিশ্ব পানি দিবস পালন করে আসছে ২০২৩ সালে সারাবিশ্বে পানি সংকটকে মোকাবেলা করার জন্য “পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করো” প্রতিপাদ্য করে ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস পালিত হচ্ছে।দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে, আমাদের দেশের শতকরা ৫৯ ভাগ মানুষ নিরাপদ খাবার পানি পায়। বাকি ৪১ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৭ কোটি মানুষ নিরাপদ খাবার পানি থেকে বঞ্চিত। জাতিসংঘের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাংলাদেশে সকলের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সকলের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিতকরণে সরকারকে বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ/তিনগুণ হারে প্রয়োজন অনুযায়ী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি আমাদেরকে পানির অপচয় রোধ করতে হবে। ভূ-পৃষ্ঠের পানি ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে, একইসাথে ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার হ্রাস করতে হবে। জমিতে ক্ষতিকর কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যাবহার বন্ধ করতে হবে। ময়লা পানি ও আবর্জনা দিয়ে নদী নালার পানিকে দূষিত করা চলবে না। শহরে গ্রামে সব জায়গায় ময়লা পানি ও আবর্জনা রাখার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করতে হবে। ব্যবহৃত পানি পুণ্যবহারসহ প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন পদক্ষেপ যত দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে, সমস্যার চিত্র পরিবর্তন তত ত্বরান্বিত হবে। দেশের সকল শিশু, নারী, পুরুষ নিরাপদ পানি পান করার সুযোগ পাবে এবং সকলের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হবে।
ওয়েভ ফাউন্ডেশন এ বছর ১৫টি জেলার কর্মএলাকায় পানির সংকট মোকাবেলা করে সকলের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিতকরণে সব স্তরের জনগণকে সচেতন ও উদ্যোগী করার জন্য বিশ্ব পানি দিবস ২০২৩ পালন করছে। আশা করা যায়, বিশ্ব পানি দিবসের অনুষ্ঠানসমূহে অংশগ্রহণকারী ১৮ হাজারেরও অধিক মানুষ এ বিষয়ে সচেতন হয়ে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালনে উদ্যোগী হবে।
এক্সেস প্রকল্পেটি ওয়াটার- ওআরজি এর কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।