মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের ৬টি বাড়ি বুধবার (২২ এপ্রিল) লকডাউন করা হয়েছে। এদের মধ্যে একটি পরিবারের ৪ সদস্য অভুক্ত সময় কাটাচ্ছেন। সরকারী ও স্থানীয় কোন সহযোগিতা না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করা পরিবারে বাড়ছে ক্ষোভ।
ভুক্তভোগীরা বলেন, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোয়ারিন্টিন করায় তিনি খোঁজ নিতে পারছেন না হয়তো। অন্য কেউ তাদের খোঁজ খবর না নেওয়া অসহায়ত্বের পাশাপাশি চরম ক্ষোভ বাড়ছে।
ভুক্তভোগী জীবন ইসলামের সাথে আজ বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে মোবাইলে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, আমার বাড়িতে চাউলসহ খাদ্য দ্রব্য তেমন কিছুই নেই। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আলু ভর্তা আর ভাত রান্না হয়েছিল। এখনো দুপুরের রান্না হয়নি। বাসায় আমার অসুস্থ বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও শিশু কন্যা রয়েছে। এমন অবস্থায় কিভাবে তাদের আহার জোগাবো তা ভেবে পাচ্ছি না।
জানা গেছে, লকডাউনে থাকা ৬টি পরিবারের মধ্যে তিনটি পরিবার দরিদ্র। এদের মধ্যে কেদারগঞ্জ জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন জীবন মিয়া কওমি মাদ্রসার পাচকের কাজ করে সংসার চালাতেন। বেশ কিছুদিন আগে থেকে তার পেশাগত কাজ বন্ধ হলে দিনমজুরী শুরু করেন। লকডাউনে থাকায় এখন তার কোন রোজগার নেই।
প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোয়ারিন্টিনে রয়েছেন তাই হয়তো তিনি মোবাইল রিসিভ করছেন না। স্থানীয় ইউপি সদস্য শংকরকে কয়েকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। কল কেটে দিচ্ছেন।
লক ডাউনে থাকা একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সকালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একজন গ্রাম পুলিশ সদস্য লকডাউনে থাকা তিনটি পরিবারে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে গেছেন। জীবন ইসলামের কেউ কোন খোঁজ নেয়নি এবং খাবার পৌঁছায়নি।
তবে জেলা প্রশাসক আতাউল গনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সব সহায়তা দেয়া হচ্ছে। কারো কোন সমস্যা হলে তিনি আমাদেরকে মোবাইলে জানালে দ্রুত ব্যবস্থা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ব্র্যাকের এক যক্ষাকর্মী করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় তার ভাড়াবাড়িসহ আশেপাশের ৬টি বাড়ি বুধবার সকালে লকডাউন করে প্রশাসন। ওই দিন মৃত্যু বরণ করা এক ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ায় মুজিবনগর উপজেলা আজ বৃহস্পতিবার লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির দাফন ও চিকিৎসায় সংস্পর্শে আসায় মুজিবনগরের ইউএনও, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ওসি (তদন্ত), চিকিৎসকসহ ২৪ জন কোয়ারিন্টিনে গেছেন।