সাইদুর রহমান সাঈদ একজন সরকারি কর্মচারী। বাংলাদেশ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাঠ সহকারি পদে কর্মরত রয়েছেন। সরকারি চাকরিবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। করছেন রাজনৈতিক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা। সম্প্রতি মেহেরপুর-১ সংসদীয় আসনের নৌকা প্রতীক সমর্থিত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা সভার সঞ্চালনাও করছেন।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ অংশে বলা আছে, সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতে পারবেন না।
ইতোপূর্বে সাইদুর রহমান মেহেরপুর সদরে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখাতে কর্মরত। অসুস্থতা জনিত কারণ দেখিয়ে দীর্ঘদিন যাবত ছুটিতে থেকে তিনি রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন নির্দ্বিধায়। করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ফরহাদ হোসেনের (নৌকা) প্রচারণাও।
সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক সভায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের একটি নির্বাচনী প্রচারণা সভায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থনে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, চাকরি সূত্রে তিনি দেশের সকল জেলা ঘুরেছেন। অনেক রাজনৈতিক নেতার সাথে তার পরিচয়ের সুযোগ হয়েছে। তবে তিনি যে প্রার্থীর প্রচারণা করছেন তার মতো একটি মানুষও তিনি আর খুঁজে পান নাই। এর পর থেকেই শুরু হয় সচেতন মহলে নানা প্রতিক্রিয়া। সরকারি চাকুরীতে থেকে তিনি কিভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও রাজনৈতিক সভায় অংশ নিচ্ছেন।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মেহেরপুর জেলার শাখা প্রধান মেহেদী হাসানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন সাইদুর রহমান বেশ কিছুদিন আগেই চুয়াডাঙ্গাতে বদলি হয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ম্যানেজার আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘সাইদুর রহমান সাঈদ জেলা শাখাতে কর্মরত আছেন। চাকুরিতে থেকে এ ধরনের কর্মকন্ড করার কোন সুযোগ নেই। আপনি বরং জেলা শাখার ম্যানেজারের সাথে কথা বলেন। ‘
চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার ম্যানেজার আমেনা খাতুন কে বিষয়টি অবহিত করে এ সম্পর্কে তার মতামত জানতে চাইলে তিনি বিস্মিত হয়ে বলেন, ‘সাইদুর রহমান তো অসুস্থ রয়েছেন। তিনি মেডিক্যাল লিভে ছিলেন ১৫ দিনের জন্য। পুরোপুরি সুস্থ হতে না পারায় দ্বিতীয় দফায় ২১ দিনের মেডিকেল লিভে আছে। দ্বিতীয় দফার ছুটি মাত্র তিন দিন অতিবাহিত হয়েছে। বিষয়টি যদি অসত্য হয় তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নেব। এছাড়াও চাকরিবিধি ও চাকুরী শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী তিনি কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ড বা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণ পেলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।
এ সম্পর্কে সাইদুর রহমান সাঈদের বক্তব্য জানতে বেশ কয়েকবার তার মুঠোফোনে কল দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।