মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেবিকা ও ওয়ার্ড বয়দের উপর হামলা চালিয়ে রোগীরা স্বজনরা। এসময় বেশ কিছু আসবাবপত্রও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে কর্মবিরতিতে যাওয়ার কথা চিন্তা করছে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের লোকজনের উপর।
জানা গেছে, সদর উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমানের আত্মিয় একই ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আলী হোসেন (৭২) পুরুষ ওয়ার্ডের বি-৩২ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সকালে ওয়ার্ড ভিজিটের সময় রোগীর এটেনডেন্টকে ওয়ার্ডের বাইরে অপেক্ষা করতে বললে, তিনি সংক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকজনকে ফোন দেন। এসময় শ্যামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতির ছোট ভাইসহ বহিরাগত আট দশ জন এসে ওয়ার্ডব, নার্স ও ডাক্তারদের উপর চড়াও হয়। এসময় ওয়ার্ড বয় হিমেল, ওয়ার্ড মাস্টার সেলিম সহ কয়েকজন আহত হয়।
হামলার ঘটনা জানতে পেরে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেন এবং সংক্ষুব্ধদের তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে কথা বলার ফাঁকে বহিরাগত আরো কয়েকজন সেখান থেকে বের হয়ে পাশে হাসপাতালের হিসাবরক্ষকের রুমে ভাঙচুর চালায়। এ সময় সিনিয়র স্টাফ নার্স বিউটি খাতুনসহ কয়েকজন সেবিকা ও ওয়ার্ডবয় লাঞ্ছিত হয়। ঘটনার পর শ্যামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেন।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আাবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) মো: ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘হাসপাতালে ওয়ার্ড ভিজিটের সময় এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা একটি নিয়মিত ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এর বেশি আমি আর কিছু বলতে পারব না।
শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি বলেন, ‘ঘটনার কথা শুনে আমি হাসপাতালে গেছিলাম।হাসপাতাল সুপারের সাথে কথা হয়েছে। ছোট একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, সমঝোতার প্রক্রিয়া চলছে।’
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জামির মোঃ হাসিবুর সাত্তার বলেন, ‘মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। তবে একজন জনপ্রতিনিধি আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কাম্য নয়। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা আজকে যে তাণ্ডব চালিয়েছে এতে হাসপাতলের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। হাসপাতালের সকল স্টাফ কর্ম বিরতিতে যেতে চাচ্ছে। আমরা হাসপাতালের সকল স্টাফ মিটিংয়ে বসে একটি সিদ্ধান্ত নেব। আগের ঘটনাগুলোতে পুলিশে অভিযোগ করে কোন ফল পাওয়া যায়নি, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবার আদালতে মামলা করব।
মেহেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ কনি মিয়া বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন অভিযোগ করেনি। আমি বাইরে থেকে ঘটনা শুনে ইন্সপেক্টর তদন্তকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ‘