জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি বলেন, ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুর পরিবারের মতোই ২০০৪ সালের আরেকটি আগষ্ট সৃষ্টি করে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। শেখ হাসিনাকে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামীলীগকে নিশ্চিহৃ করতে চেয়েছিল। শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগকে নিশ্চিহৃ করার মধ্য দিয়ে এদেশকে ধ্বংষ করতে চেয়েছিল।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার আজ এই বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।
মেহেরপুর জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জামায়াত বিএনপি সরকার এদেশকে কারাগারে পরিণত করেছিল। বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের কাছে সার চেয়ে ১৯ জন কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন।
মেহেরপুর জেলার মানুষও সেদিন দিনের বেলায় মাঠে কাজ করে রাত জেগে পাড়ায় পাড়ায় পাহারা বসিয়ে নিজেদের রক্ষা করতো তারা আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের হাত বেধে ধরে নিয়ে এসে জুলুম নির্যাতন চালাতো।
সারা বাংলাদেশে একযোগে আদালতে বোমা হামলা, যশোরে উদীচির অনুষ্ঠানে সিনেমা হলে, রমনা পার্কের বৈশাখির অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালিয়েছিল। আওয়ামীলীগের সমাবেশে বোমা হামলা চালিয়ে তারা বলেছিল শেখ হাসিনা ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে এসে নিজেই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
ঢাকায় সমাবেশ ডেকে মতিউর রহমান নিজামী আর মুজাহিদের ব্যাঙ্গাত্বক হাসি হেঁসে বলেছিল আওয়ামীলীগের অন্তর্দ্বন্দে বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ পরপর তিনবার রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় আসার পরেও শেখ হাসিনা সেই বোমা হামলার প্রতিশোধ নিতে বলেননি। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলেও বিএনপির কোনো কর্মসূচীতে নিষ্ঠুরভাবে গ্রেনেড হামলার মত কোনো ঘটনা ঘটানো হয়নি।
ফরহাদ হোসেন বলেন, কে আপনাকে ভোট দিলো কে দিলোনা, এটা না ভেবে দেশের উন্নয়নে সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করবেন।
জেলার উন্নয়ন তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেহেরপুর এখন সারা বাংলাদেশের উন্নয়নের অনন্য জনপদ। মেহেরপুরে ৫৯ কিলো ভৈরব নদ খনন, মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চেকপোষ্ট, বেতার স্টেশন, রেল লাইনের অনুমোদন, ৬৫৩ কোটি টাকা ব্যায়ে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া রাস্তা নির্মাণ, মেহেরপুর আবহাওয়া অফিস, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড এ্যাকি্্রবিশন সেন্টার, টিটিসি নির্মাণসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজ মাদ্রাসার সুরম্য ভবণ নির্মাণসহ সদর ও মুজিবনগরের বিভিন্ন রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য এলজিইডির আওতায় ৪৬৮ কোটি টাকা ব্যায়ে উন্নয়ন হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেহেরপুর-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও মেহেরপুর-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের দারপ্রান্তে পৌছে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এমপি খোকন বলেন, শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিটি কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন। এই দেশকে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি। সেটি আজ বাস্তবায়ন হয়েছে। গ্রাম আজ শহরে রুপান্তরিত হয়েছে। তাই আগামী ২০২৪ সালের নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ থেকে নেতা কর্মীদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে জেলার ২ টি আসন শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে হবে।
ব্যক্তিগত চাওয়ার পাওয়ার উর্দ্ধে থেকে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে শেখ হাসিনার প্রতিটি নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না আসলে কি হবে সেটা আপনারা ২০০১ সালের দিকে তাকালে দেখতে পাবেন। আমরা ২০০১ সালে ফিরে যেতে চাইনা। শেখ হাসনিার উন্নয়নের জয়যাত্রাকে আরো বেগবান করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা এদেশের অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, গৃহহীণদের গৃহ প্রদান, মেঠোপথগুলোকে পিচঢালা পথে রুপান্তর করা, শিক্ষাঙ্গনকে সাজিয়ে তোলা।
প্রতিটি ইউনিয়নে পাড়ায় মহল্লাতে আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করে দূর্গ গড়ে তুলতে হবে। যেনো স্বাধীনতা বিরোধী এবং আন্তর্জাতিক চক্রান্তের দালালরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি হিসাব উদ্দীন মিয়া, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ খালেক, সহ সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, জেলা পরিষদ সদস্য কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগের সদস্য শামীম আরা হিরা, মেহেরপুর পৌরসভার মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, গাংনী পৌরসভার মেয়র আহম্মেদ আলী প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন বিশ্বাস, মেহেরপুর জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট পল্লব ভট্টাচার্য, গাংনী পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলাম, জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন মিরন, আজিমুল বারী, শাহানা ইসলাম শান্তনা, মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিন আহমেদ চুন্নুসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বর, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।