ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৭ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করেছে মেহেরপুর প্রতিদিন ।
নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়ে হলফনামায় দেখা গেছে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৭ প্রার্থীর মধ্যে শিক্ষায় এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।
আব্দুল মান্নান
মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সহ—সভাপতি মোহা: আব্দুল মান্নান মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী। আব্দুল মান্নান এর আগে একাধিকবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় বারবার ব্যার্থ হয়েছেন। তবে, এবার তিনি ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। তার নির্বাচনী প্রতিক ঘোড়া মার্কা।
হিসাব বিবরণীতে দেখা গেছে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাৎসরিক আয় আসে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, নিজ নামে নগদ টাকা রয়েছে ২ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে নগদ টাকা রয়েছে ২০ লক্ষ টাকা, ব্যাংকে জমা রয়েছে ১ হাজার ৭৯৩ টাকা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে লোন রয়েছে আড়াই লাখ টাকা, তবে খেলাপি নেই বলে দাবি করেন প্রাথী আব্দুল মান্নান। অন্যান্য ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে ৮ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে স্বর্ণালংকার রয়েছে ৭ ভরি ও নির্ভরশীলদের নামে রয়েছে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার।
আনারুল ইসলাম
মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম। সে একবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করে ১৩ বছর অধিষ্ট ছিলেন। এবার সে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। তার নির্বাচনী প্রতিক মোটরসাইকেল।
নির্বাচনী হলফনামায় দেখা গেছে, ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ৮ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৬ টাকা. নজ নামে নগদ টাকা ১০ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে নগদ টাকা ৫ লাখ টাকা, নির্ভরশীলদের নামে নগদ টাকা ১০ লাখ টাকা, ব্যংকে জমাকৃত নগদ টাকা মাত্র ১ হাজার টাকা, নিজ নামে একটি ডিসকভার ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল, ৩ ভরি স্বর্ণালংকার, স্ত্রীর নামে ৭ ভরি স্বর্ণালংকার, অন্যান্য ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে ১৭ লাখ টাকা, কৃষি জমি রয়েছে ৫ বিঘা পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া, অগ্রণী ব্যাংকে তার নামে লোন রয়েছে ২ লাখ টাকা।
অ্যাড. ইব্রাহীম শাহীন
মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ইব্রাহীম শাহীন। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। তার নির্বাচনী প্রতিক কাপ পিরিচ।
হলফনামায় দেখা গেছে, আইন পেশা থেকে বাৎসরিক আয় ৪ লাখ টাকা, নগদ টাকা রয়েছে ১ রাখ ৫০ হাজার স্ত্রীর নামে নগদ রয়েছে ৫ লাখ টাকা, নিজ নামে ব্যাংকে জমা রয়েছে ৯ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা রয়েছে ৭ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে পোস্টাল সেভিংস, সঞ্চয়পত্র ও আমানত ৩৯ লাখ টাকা, ৩ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রীজ ও মোবাইল ও এ্যাসি ৩ লাখ টাকার, আসবাবপত্র খাট সোফা, চেয়ার টেবিল ইত্যদি ৩ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ৩২ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, গৃহস্থলি আসবাবপত্র রয়েছে ৬ লাখ টাকার, নিজ নামে অকৃষি জমি রয়েছে ২৫ কাঠা, বাড়ি রয়েছে এক কাঠা জমিতে। এছাড়া স্ত্রীর নামে অকৃষি জমি রয়েছে ৫ বিঘা।
মো: হাসেম আলী
নির্বাচনের আরেক প্রার্থী মো: হাসেম আলী। তার নির্বাচনী প্রতিক আনারস।
তার হলফনামায় ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ১৬ লাখ টাকা, নগদ অর্থ রয়েছে ৫ লাখ টাকা, ব্যাংক জমার পরিমাণ মাত্র ১০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে নগদ রয়েছে ৪ লাখ টাকা, নিজ নামে ৫ ভরি ও স্ত্রীর নামে ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, অন্যান্য ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে ২০ লাখ টাকা, নিজ নামে ৮ শতক জমির উপর দুই তলা বাড়ি। রুপালী ব্যাংকের মেহেরপুর শাখায় তার নামে ৪০ লাখ টাকা লোন রয়েছে। তবে খেলাপি নেই।
আমাম হোসেন মিলু
মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার প্রার্থী হয়েছেন মহাজনপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী আমাম হোসেন মিলুর এবারের প্রতিক আনারস।
চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলুর হলফনামায় সম্পদের বিবরণী রয়েছে কৃষিখাত থেকে আয় ১ লাখ টাকা, বাড়ি ও দোকান ভাড়া বাবদ আয় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, ব্যাংক জমা রয়েছে ১ হাজার ৯৪২ টাকা, বাস ট্রাক থেকে আয় ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণ ও অন্যান্য ধাতুর মুল্য ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীর মুল্য ৪২ হাজার টাকা, আসবাবপত্রের মুল্য ৪৮ হাজার টাকা, কৃষি জমি রয়েছে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া) ১৫ বিঘা, অকৃষি জমির মুল্য (ক্রয় সূত্রে) ৩৩ লাখ ৭২ হাজার ৬০০ টাকা, দালান আবাসিক (ক্রয় সূত্রে) ১৭ লাখ ৫০০ টাকা, ব্যবসার পূঁজি বাবদ ৫৯ লাখ ৪৫ হাজার ৭৪০ টাকা।
রফিকুল ইসলাম তোতা
মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আরেক প্রার্থী রফিকুল ইসলাম তোতা। নির্বাচনে তার প্রতিক কাপ পিরিচ।
নির্বাচনী হলফনামায় তার সম্পদ বিবরণীতে দেখা গেছে কৃষিখাত থেকে বাৎসরিক আয় ৭৫ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, নিজ নামে নগদ টাকার পরিমাণ ৫ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে নগদ টাকার পরিমাণ ৩ লাখ, ব্যাংকে জমা রয়েছে মাত্র ১ হাজার টাকা, একটি ট্রাক রয়েছে যার মূল্য ৫ লাখ টাকা, একটি মোটরসাইকেল যার মূল্য ৭০ হাজার টাকা, নিজ নামে স্বর্ণালংকার ৭ ভরি ও স্ত্রীর নামে স্বর্ণালংকার ৮ ভরি, অন্যান্য ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে ৩২ লাখ ৭ হাজার ৭৯০ টাকা, নিজ নামে কৃষি জমি রয়েছে ১০ বিঘা, আবাসিক দালান রয়েছে ১৯ শতক জমির উপর দোতালা। নিজ নামে রুপালী ব্যাংকের মুজিবনগর শাখায় লোন রয়েছে ২৯ লাখ ৭৭ হাজার ৭৯০ টাকা।
কামরুল হাসান চাদু
মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক ভাইসচেয়ারম্যান কামরুল হাসান চান্দু। এবার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়েছেন। তিনি মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য। তার নির্বাচনী প্রতিক ঘোড়া। তার নির্বাচনী হলফনামার হিসাব বিবরণীতে দেখা গেছে কৃষিখাত থেকে বাৎসরিক আয় ২০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, নগদ টাকা ১০ লাখ, স্ত্রীর নামে ৩ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা রয়েছে ৫ হাজার টাকা, নিজ নামে ৮ আনা, স্ত্রীর নামে সাড়ে ৭ ভরি ও নির্ভরশীলদের নামে ২ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। ফ্রীজ টিভি, ফ্যান ও মোবাইল ফোন যার মূল্য ৬০ হাজার টাকা, অন্যান্য ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া নিজ নামে কৃষি জমি ৩ বিঘা ও স্ত্রীর পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৫ বিঘা জমি রয়েছে। নিজ নামে সাড়ে ৩ কাঠা জমির উপর দোতালা ও স্ত্রীর নামে ১৫ শতক জমির উপর তিন তলা বাড়ি রয়েছে।