মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অফিস যেন অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। অফিস কক্ষের সিড়ি, টয়লেট, জানালার পাশে ব্যবহৃত কনডমের ছড়াছড়ি দেখা গিয়েছে। এ ধরণের গুরত্বপূর্ণ সরকারি অফিসে এ দৃশ্য যে কোন বিবেকবান মানুষকে তাড়না দেবে। এবং একই সঙ্গে সরকারি অফিসগুলোর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে।
গত সোমবার ২৭ ফেব্রুয়াির বিকালে এ চিত্র দেখা গেছে। যার ভিডিও চিত্র ও স্থির চিত্র মেহেরপুর প্রতিদিনে সংরক্ষিত রয়েছে।
সরেজিমেন গিয়ে দেখা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অফিসের নিচতলার গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখ সিড়ির নিচে।
অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় টয়লেটের প্রতিটি কক্ষে কনডম ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। তারপর যা দেখা যায় রীতিমত অবাক হওয়ার মত। এটা কি একটা জেলা শহরের কোন সরকারি দপ্তর নাকি নিষিদ্ধ পল্লী। টয়লেটের প্রতিটা কক্ষেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ব্যবহৃত কনডম এবং সিঁড়ির নিচে গিয়েও দেখা যায় একই অবস্থা।
বিকাল আনুমানিক ৪টার দিকে অফিসের গুটিকতক স্টাফ থাকলেও উচ্চ পদস্থ কোন কর্মকর্তাকে তখন পাওয়া যায়নি। সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করায় তিনি চুয়াডাঙ্গা অবস্থান করেন। দাপ্তরিক প্রয়োজনে মাঝে মধ্যে তিনি মেহেরপুর অফিস করেন। সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী তিনি মেহেরপুর অফিস দেখভাল করেন। তবে নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেরপুরে না থাকার সুযোগে অফিসের একটি চক্র অসামাজিক কাজে অফিসকে বেছে নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সওজের একাধিক কর্মচারী জানান, এই ধরনের ঘটনা বেশ কিছু আগে থেকেই দেখছেন কিন্তু তার উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেন না কে বা কারা অফিসের মধ্যে এই কাজ করে সেটাও তিনি জানেন না । এসব দেখে আমরা খুব বিব্রত। কিছু বলতে পারি না ঠিকাদার থেকে শুরু করে বাইরের যেকোন গেস্ট অফিশিয়াল কোন কাজে গেলে ঐ টয়লেটগুলো ব্যবহার করে। সবারই চোখে পড়ে ঐ সব। অফিস শেষে সন্ধ্যার পর আর কেউই অফিসের মধ্যে ঢুকে না এবং অফিসের চাবি থাকে কর্মচারীর কাছে বেশ কিছুদিন আগে এসডি সেই চাবিটাও কর্মচারীর কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক এক ঠিকাদারও টয়লেটে গিয়ে বিপাকে পড়েন। তিনিও জানান, এ ধরণের ঘটনা খুবই ন্যাক্কার ও লজ্জাজনক।
মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগে একজন এসডিও, ৩জন এসও সহ কর্মকর্তা কর্মচারী মিলে আছেন ২২ জন কর্মরত রয়েছেন। অফিস এরিয়ার ভিতরে স্টাফ কোয়ার্টারে কয়েকজন কর্মকর্তাসহ কর্মচারী বসবাস করেন। তারা ব্যাচেলর থাকেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিমের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা হয়ে থাকলে খুব লজ্জাজনক হবে। বিষয়টি যাচাই বাছাই করে যারা এসকল কাজের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।