`গুরু মা হঠাও, দেশ বাঁচাও’ স্লোগান তুলে গুরু মা সীমা হিজড়ার নির্যাতন ও তার কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মেহেরপুরের হিজড়া সস্প্রদায়ের সদস্যরা।
সোমবার সকালে মেহেরপুর জেলা প্রেস ক্লাবে রেখা হিজড়ার নেতৃত্বে ১২ জন হিজড়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
বক্তব্য দিতে গিয়ে সীমা হিজড়ার অন্যায়, অত্যাচারের বর্ণনা দিতে গিয়ে অনেকেই কেঁদে ফেলেন এবং প্রশাসনের কাছে তার বিচারের দাবি করেন।
এ সময় সিমরান হিজড়া বলেন, রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে লাঞ্ছনা সহ্য করে আমরা গ্রামে গ্রামে কাজ করে আয় করি। আর গুরুমা সব টাকা নিয়ে নেই। গুরুমা রা রাজতন্ত্র প্রথা চালু করে আমাদের নির্যাতন করে। আমরা প্রতিবাদ করলে হিজড়া সন্ত্রাসী ভাড়া করে নিয়ে এসে আমাদের নির্যাতন করে।
সোহাগী হিজড়া বলেন, সীমা হিজড়া আমার গুরু মা। আমাকে তিনি হুমকি দেন, সবসময় ভয়ভীতি দেখান। আমি পুলিশ সুপারের কাছে হাতজোড় করে আবেদন করছি যাতে এই গুরুমা আমাদের নির্যাতন করতে না পারে এবং তার অধিনে যাতে থাকতে না হয় তার আবেদন করছি।
সন্ধ্যা বলেন, দুই লাখ টাকা নিয়ে তাঁকে ১০টা গ্রামে কাজ করতে দেয়। তারপরও ইনকামের টাকা সীমা কেড়ে নেয়। আমরা হিজড়া ছিলাম না, আমাদের হিজড়া বানানো হয়েছে তার স্বার্থ রক্ষার জন্য। আমরা তার বিচার চাই।
সুরভী বলেন, আমি বিয়ে বাড়িতে নাচ করে বেড়াতাম। আমি পুরুষ ছিলাম। সে আমাকে প্রলোভন দিয়ে হিজড়া বানিয়ে এক লাখ টাকা নিয়েছে। পরে যখন হিজড়া হয়ে গ্রামে গ্রামে কাজ করতে যায় তখন তার লোকজন দিয়ে আমাকে মারধর করে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন লিপি, সুমী, রেখা, নুপুর, পিংকি, রুবিনা ও অন্তরা। তারা বলেন, আমরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবজাতক সন্তানদের নাচিয়ে টাকা ইনকাম করি। গুরু মার নির্দেশে মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে টাকা নিতে হয়। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আমরা দুটি উপজেলা থেকে ইনকাম করে নিয়ে আসি। সেখান থেকে তিনি আমাদের মাত্র ৫ হাজার টাকা দেন। আর বাকিটা তিনি তার পৌষ্য কন্যার কাজে দিনাজপুরে পাঠিয়ে দেন। আমরা তার কথামত ইনকাম না করে আনলে আমাদের উপর নির্যাতন শুরু করে। আমরা নিজেরা বাচ্চা নাচালে যে যা খুশি হয়ে দেবে আমরা তা নিয়েই নিজের জীবন জীবিকা নির্বাহ করবেন বলে জানান। তিনি রাজতন্ত্র কায়েম করে আমাদের চালাতে চান।
তবে এ ব্যাপারে সীমা হিজড়ার সাথে যোগাযোগ করলে সে প্রথমে ঔধ্বত্যপূর্ণ আচরণ করেন। পরে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা বলেছেন তারা মিথ্যা বলেছেন। হিজড়া সম্প্রদায়ের নিয়ম আছে সে নিয়মেই তাদের চলতে হয়।