পুলিশের দায়ের করা মামলায় মেহেরপুরে জামিনে মুক্ত হলেন এক শিক্ষার্থীসহ বিএনপি- জামায়াতের ৩২ জন রাজনৈতিক নেতা কর্মী। আজ বুধবার বিকালে মেহেরপুর জেলা কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে মেহেরপুর জেলায় কোনো আন্দোলন না চললেও গত ১৮ জুলাই থেকে গত ৪ আগষ্ট পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু ও এক শিক্ষার্থীসহ বিএনপি জামায়াতের ৩২ জনকে গ্রেফতার করে বিভিন্ন মামলার আসামি করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন পুলিশ।
মেহেরপুর জেলা কারাগারের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত জেল সুপার সহকারি কমিশনার আবীর হোসেন বলেন, আদালত থেকে জামিননামা আসার পর যাচাই–বাছাই করে আজ বুধবার বিকালে ৩২ বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু, তার নামে গাংনী থানার মামলা নং ২০, জিআর মামলা নং ৪০৫/২৩, ধারা ১৯৭৪ স্পেশাল পাওয়ার এক্ট ১৫(৩)/২৫ ডি এর ৪/৬, সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের বিনপি নেতা আসাদুল ইসলাম, সদর থানার মামলা নং ৩১, জিআর ২১২/২৩, ধারা তৎসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানবলী আইনের ৪/৫, মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের জিনারুল ইসলাম, মুজিবনগর থানার মামলা নং ১৯, জিআর মামলা নং ১১৩/২৪, ধারা ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট ১৫(৩)২৫(সং/২০০২) এর ৪/৫/৬, একই মামলার আসামি পুরন্দর গ্রামের রাহিদুল ইসলাম, গাংনী উপজেলার বামন্দী গ্রামের বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র আতিকুর রহমান, গাংনী মামলা নং ০৮, জিআর মামলা নং ৩৯৩/২৩, ধারা ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট ১৫(৩)/২৫ ডি তৎসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানবলী আইনের ৪/৬, সদর উপজেলার টেংরামারী গ্রামের বিএনপি কর্মী জাহাঙ্গীর আলম, মামলা নং ৩১, জিআর মামলা নং ২১২/২৩, ধারা ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানবলী আইনের ৪/৫, একই আইনের আসামি মুজিবনগর উপজেলার রামনগর গ্রামের বিএনপি কর্মী জামাতুল ইসলাম, সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের সোহরাব হোসেন মল্রিক, সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বিএনপি কর্মী আব্দুল বারীক, গাংনী থানার মামলা নং ১২, জিআর মামলা নং ৫৪/২৩, ধারা ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট এর ৪/৬, সদর উপজেলার নুরপুর গ্রামের হায়দার আলী, তার সদর উপজেলার মামলা নং সেসন ৫৮/১৭, ধারা ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদান বলী আইনের ( সং/২০০২) এর ৪/৫/৬, মুজিবনগর উপজেলার বিশ্বনাথপুর গ্রামের জামায়াত নেতা খায়রুল ইসলাম, মুজিবনগর থানার মামলা নং ১৯, সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের বিএনপি কর্মী ইব্রাহিম খলিল, গাংনী থানার মামলা নং ০৪, জিআর মামলা নং ২৭৩/২৩, ধারা ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট এর ৪/৬, সদর উপজেলার ঝাঝা গ্রামের বিএনপি কর্মী মোজাম্মেল হক, গাংনী থানার মামলা নং ২০, জিআর মামলা নং ৪০৫/২৩, একই মামলার আসামি সদর উপজেলার বন্দর গ্রামের জামায়াত কর্মী সাব্বির হোসেন, সদর উপজেলার ইসলামনগর গ্রামের জামায়াত কর্মী আনোয়ার হোসেন বাবু, গাংনী থানার মামলা নং ৪৩, জিআর মামলা নং ২৪৩/২৩, ধারা বিস্ফোরক উপাদানবলী আইনের ৪/৬, মুজিবনগর উপজেলার খানপুর গ্রামের বিএনপি কর্মী ইলিয়াস হোসেন, মুজিবনগর থানার মামলা নং ১৯, জিআর মামলা নং ১১৩/২৪, ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট ১৫(৩)/২৫ ডি, তৎসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানবলী আইনের (সং/২০০২) এর ৪/৫/৬, একই আইনে মামলার আসামি সোনাপুর গ্রামের আব্দুল মজিত, পুরন্দর গ্রামের রহিদুল ইসলাম, গাংনী উপজেলার হেমায়েতপুর গ্রামের বিএনপি কর্মী হাসানুজ্জামান লাল্টু, গাংনী থানার মামলা নং ২১, জিআর মামলা নং ৪৫১/২৩, ধারা ১৯৭৪ সালের বিস্ফোরক উপাদানবলী আইনের ১৫(৩)২৫ ডি এর ৪/৬, মেহেরপুর শহরের স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার বিএনপি কর্মী আজমল হোসেন মোল্লা, সদর থানার মামলা নং ৩১, জিআর মামলা নং ২১২/২৩, ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানবলী আইনের ১৫(৩)২৫ ডি এর ৪/৫, একই আইনের আসামি সদর উপজেলার হিজুলী গ্রামের জামায়াত কর্মী খোদা বকস, বন্দর গ্রামের আব্দুল ওহাব, কলাইডাঙ্গা গ্রামের লিয়াকত আলী, মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের বিএনপি কর্মী আবু মুছা, মুজিবনগর থানার মামলা নং ১৪, জিআর মামলা নং ১৫১/২৩, ধারা ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট এর ১৫(৩)২৫ ডি, সদর উপজেলার বন্দর গ্রামের জামায়াত কর্মী আবদুল ওহাব, মেহেরপুর সদর থানার মামলা নং ৩১, জিআর মামলা নং ২১২/২৩, ধারা ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানবলী আইন ১৫(৩)২৫ ডি এর ৪/৫, একই আইনের আসামি কলাইডাঙ্গা গ্রামের বিএনপি কর্মী লিয়াকত আলী, সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের বিএনপি নেতা মুছা, সদর থানার মামলা নং ১৪, জিআর মামলা নং ১৫১/২৩, ধারা ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট ১৫(৩)২৫ ডি, একই মামলার আসামি বাগোয়ান গ্রামের হজরত আলী, রামনগর গ্রামের জামায়াত নেতা আনারুল ইসলাম, রাজনগর গ্রামের জামায়াত কর্মী হাফিজুর রহমান, হিজুলী গ্রামের বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম, গাংনী উপজেলার জুগিন্দা গ্রামের ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি হাবিবুর রহমান, গাংনী থানার মামলা নং ০৮, জিআর মামলা নং ৩৯৩/২৩, ধারা ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট ১৫(৩)২৫ তৎসহ ৪/৫, সাহারবাটি গ্রামের বিএনপি কর্মী আবু বক্কর, গাংনী থানার মামলা নং ৯, জিআর মামলা নং ৩৯৪/২৩, ধারা ধারা ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট ১৫(৩)২৫ তৎসহ ৪/৫, একই আইনে মামলার আসামি গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম নুরু, গাংনী উপজেলার গাঁড়াডোব গ্রামের বিএনপি কর্মী বানারুল ইসলাম, গাংনী থানার মামলা নং ৪৩, ঝিআর মামলা নং ২৬৭/২৩ ও মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের বিএনপি কর্মী মকলেছুর রহমান, মুজিবনগর থানার মামলা নং ১৯, জিআর মামলা নং ১১৩/২৪, ধারা ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার এক্ট এর ১৫(৩)২৫ ডি।
আসামিদের পক্ষে মেহেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাদ্দাম হোসেনসহ কয়েকজন আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন বলেন, মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মঞ্জুল ইসলামের আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করলে আসামিদের জামিন দেন।
এদিকে জামিনপ্রাপ্ত বিএনপির এসব নেতা কর্মীদের জেলগেট থেকে গ্রহণ করেন মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি মাসুদ অরুন। এসময় মেহেরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাসহ অন্যান্য নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু জেল গেট থেকে বের হওয়ার পর বিপুল পরিমান নেতা কর্মী গ্রহণ করেন। পরে তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন।