এম এফ রুপক
কনকনে শীত, কুয়াশার পাশাপাশি ঠাণ্ডা বাতাস। কদিন ধরেই মেহেরপুরে বেড়েছে শীতের তীব্রতা।
গত শনিবার মেহেরপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এই তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ।
বর্তমানে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৪৫ জন শিশু রোগী ভর্তি আছে। এ ছাড়াও গতকাল রবিবার হাসপাতালের বর্হিবিভাগে ৬৫ জন শিশু রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের কনসালটেন্টে (শিশু) ডা. মাহবুবা তাজমিলা বলেন, ঠাণ্ডাজনিত সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, এলার্জি, একউট ব্রক্রিওলাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের নিচ তলার পুুরুষ ওয়ার্ডটি করোনা ওয়ার্ড করেছে কর্তৃপক্ষ। ২য় তলায় মহিলা ও ৩য় তলায় শিশু ও পুরুষ রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে পুরুষ রোগী থাকায় রোগীর চাপ বেড়েছে অনেক। সেক্ষেত্রে চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। এছাড়াও হাসপাতালে আইসিইউ ও এনকিউবেটর সুবিধা না থাকায় অনেক শিশু রোগী উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ রুপা খাতুন জানান, বর্তমানে শিশু ওয়ার্ড ও ডায়রিয়া ওয়ার্ড মিলে মোট ৪২ জন শিশু ভর্তি আছে। প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে ৩-৪ জন।
গতকাল রবিবার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে ৪০টি বেডের ব্যবস্থা আছে। পুরুষ রোগীর কারণে অনেকেই মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া শিশুর অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউ সাপোর্ট না পেয়ে স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় কিংবা বেসরকারি হাসপাতালে ছুটছেন।
সদর উপজেলার চকশ্যামনগর গ্রামের রেহেনা খাতুন, হুজাইফা আক্তার রমিজা নামের ৬ মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে তিন দিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালে। ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসলে নিউমোনিয়া ধরা পড়ে রমিজার। ডায়রিয়া জনিত সমস্যা নিয়ে রাজাপুরের শিউলি খাতুন, রেশমা খাতুন দ্জুনের বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তারা জানান, শীতকালে বাচ্চাদের নিয়ে বেশ কষ্টে আছি। মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। করোনা আতঙ্কের মধ্যেও বাধ্য হয়ে হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে।
জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মকলেছুর রহমান জানান, শীতকালে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়। প্রায় ৩০ শতাংশ রোগীই আবহাওয়া জনিত কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এছাড়াও করোনা আতঙ্কের কারণে অনেক রোগীকে আউটডোর থেকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।