মেহেরপুরে গৃহবধুর পর্ণোগ্রাফি আইনে দায়ের করা মাসলার আসামি রফিকুল ইসলাম (৫০) কে গ্রেফতার করেছে গাংনী থানা পুলিশ। রফিকুল ইসলাম মেহেরপুর সদর উপজেলার মদনা গ্রামের বেলতলাপাড়া এলাকার মৃত ফজের আলীর ছেলে।
গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন। পরে বিকালের দিকে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে গাংনী পৌর এলাকার উত্তরপাড়া গ্রামের কাঠমিস্ত্রি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী ও এক সন্তানের জননী তার বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। গাংনী থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, আসামি রবিউল ইসলাম বিভিন্ন সময় তাকে প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসতো। এতে মামলার বাদী রাজি না হওয়ায় আসামি তাকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও মান-সম্মান নষ্ট করার ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলাতে বাধ্য করে। একপর্যায়ে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী সংসার ছেড়ে রবিউল ইসলামের সাথে বিয়ে করে নেয়। সংসারের ১৫ দিনের মাথায় জানতে পারে রবিউল ইসলাম এর আরও একটি স্ত্রী রয়েছে। তাই সে রবিউল ইসলামের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে পূর্বের স্বামীর কাছে চলে আসে। এরপর আসামি রবিউল ইসলাম আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ফলে ১৫ দিনের সংসার জীবনের বিভিন্ন শারীরিক সম্পর্কের গোপনে ধারণকৃত ভিডিও বর্তমান স্বামী জিয়াউর রহমানের কাছে পাঠিয়ে সংসার নষ্ট করার চেষ্টা করে।
রবিউল ইসলাম ইতোপূর্বে গোপনে ধারনকৃত ছবি ও ভিডিও তার বর্তমান স্বামীর জিয়াউর রহমানের কাছে পাঠানোর হুমকি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের জন্য কুপ্রস্তাব দেয়। এতে বাদী নিরুপায় হয়ে কখনো চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও গাংনী এলাকার কয়েকটি বাড়িতে নিয়ে তার সাথে অবৈধভাবে শারীরিক সম্পর্ক করে।
কিছুদিন পূর্বে বাদি অবৈধ সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় তার ১১ বছর বয়সী শিশু লিজনকে মোটরসাইকেলে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তুলে নিয়ে যায়। পরে বাদি রবিউল ইসলামের সাথে শারীরিক সম্পর্কে রাজি হলে ছেলেটিকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলেও জানান জিয়াউর রহমানের স্ত্রী।
আসামি গত ২ এপ্রিল বাদীর নগ্ন ছবি ও ভিডিও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার স্বামীর মোবাইলে পাঠিয়ে সংসার ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জিয়াউর রহমানের স্ত্রী গত শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) রাতে রবিউল ইসলামকে আসামি করে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে নারীর অজ্ঞাতে তার নগ্নছবি মোবাইল ফোনে ধারন করে অন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সামাজিক ও মানসিকভাবে মর্যাদাহানি করার অপরাধ আইনে মামলা দায়ের করেন।