মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামে আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে এক বিধবা নারীর সাথে অনৈতিক কথা প্রচার করার অপরাধে মাঞ্জারুল ইসলাম নামের এক প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে আহত করেছেন আওয়ামী লীগের গ্রাম কমিটির সভাপতি মুক্তি মিয়া।
গত শুক্রবার প্রতিবন্ধী মাঞ্জারুল ইসলামকে মুক্তি মিয়া তার ছেলে হৃদয়, ভাস্তে মিরাজ ও টিপু বেদম প্রহার করে। এতে তার হাতের আঙ্গুল ও কানের পাশে ফেটে যায়।
এঘটনায় প্রতিবন্ধী মাঞ্জারুল ইসলাম রাজনগর গ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তি মিয়ার বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারী, মাদক বিক্রি, স্থানীয় চোর ডাকাতদের আশ্রয়দান ও এলাকার মানুষকে মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ আনেন। এরপর শুরু হয়েছে নানা আলোচনা, সমালোচনা।
মাঞ্জারুল ইসলাম আরও বলেন, রাজনগর গ্রামের মৃত কর্ণেলের স্ত্রী আমার খালা শাশুড়ি হন। স্বামী মারা যাওয়ার পর মুক্তি মিয়ার তার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাকে বারবার নিষেধ করার পরেও মুক্তি মিয়া কথা শোনেনি।
এলাকার লোকজনও তাকে বারবার নিষেধ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ওই বিধবা নারীর সাথে একটি ছবি বিভিন্ন মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে পড়ে।
এছাড়া তার একটি ট্রাক ফেনসিডিলসহ ফরিদপুরে র্যাবের হাতে ধরা পড়ে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে। এবিষয় আমি অন্য মানুষের সামনে প্রকাশ করাই আমাকে মারধর করে মুক্তি মিয়া, তার ছেলে ও ভাস্তেরা।
আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তি মিয়া তার বিরুদ্ধে মাদক বিক্রি ও চোর ডাকাতদের আশ্রয় প্রশয় ও মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ মিথ্যা দাবী করেছেন।
তবে, বিধবার সাথের ওই ছবিটি ৬/৭ মাস আগের দাবী করে তিনি বলেন, মাঞ্জারুল ইসলাম ওই ছবি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেছে। তিনি আরও বলেন, মাঞ্জারুল ইসলাম এলাকার একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। শুধু মাঞ্জারুল নয়, তার মায়ের বিরুদ্ধেও রয়েছে মাদক বিক্রির অভিযোগে একাধিক মামলা।
সে ইজিবাইক চালানোর আড়ালে মাদক ব্যবসা করে থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে তার মা হাজেরা খাতুন হেরোইনসহ গ্রেফতার হয়ে হাজত খেটেছেন। এছাড়া এলাকায় মাঞ্জারুলের নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের একটি মাদক বিকিকিনির চক্র রয়েছে।
এদের মধ্যে রাজনগর গ্রামের বেইলিপাড়া এলাকার সাত্তারের ছেলে ছমির উদ্দীন। ছমির উদ্দীন আমার একটি ট্রাক যার নং (ঢাকা মেট্রো ন- ১৭-৯৪১০) ভাড়া করে নিয়ে যায়। গত বৃহহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে সে ফরিদপুর জয়বাংলা তেল পাম্পের সামনে থেকে ৪৮৪ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক হয়েছে।
এঘটনায় ফরিদপুরে একটি মাদক আইনে মামলাও হয়েছে। মামলার প্রধান আসামী ফরিদপুরের আরিফ হোসেন। ফরিদপুরের আরিফ হোসেনের সাথে রাজনগর গ্রামের বেশ কয়েকজন ফেনসিডিল ব্যবসা করেন।
এব্যাপারে মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মেজবাহ উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, মাঞ্জারুল ও মুক্তি মিয়ার বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ রয়েছে। তাদের দুজনের বিরুদ্ধেই খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। তদন্ত করার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।