মেহেরপুরে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে, রাষ্ট্রীয় সম্মানের অপব্যবহার, যুব সমাজকে বাঁচাতে চাঁদাবাজ ও ব্ল্যাকমেইলাদের মুখোশ উন্মোচন করা, বাল্যবিয়েসহ নানা অপকর্মের প্রতিকার চেয়ে মানববন্ধন করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠণ।
সোমবার সকালে মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন শেষে তাদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছে।
সংগঠনের মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি কামরুজ্জামান খাঁনের নেতৃত্বে অন্যদের মধ্যে মানববন্ধনে অংশ নেন, সহ-সভাপতি মহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন হিলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিলারা জাহান, আতাউর রহমান, সাংস্কৃতিক কর্মী সোহেল রানাসহ বেশ কিছু অভিভাবক ও স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা।
মানববন্ধনে কলেজ শিক্ষার্থী শারমিন বলেন, বর্তমানে এমন একটা পরিস্থিতি হয়েছে যে আমার বাবা মা আমাকে একা ছাড়তে ভয় পায়।
সংগঠনের গাংনী উপজেলা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম পথিক বলেন, এ শুধু মেহেরপুরের সমস্যা না, এটা জাতীয় সমস্যা, যখন যে সরকার আসে সে সরকার গলা লম্বা করে করে রোডে চিৎকার দিয়ে দিয়ে নানা কথা বলে। আজকে মেহেরপুরে প্রশ্ন উঠেছে অনলাইন জুয়ার। অনলাইন জোয়ার কেন্দ্রবৃন্দ নাকি মেহেরপুর।
মেহেরপুরসহ ঢাকা শহরের সমস্ত পত্র পত্রিকা দেখলাম যে অনলাইন জুয়া শীর্ষ স্থান এবং বড় বড় এজেন্ট মেহেরপুরে বসবাস করে। আমরা যারা মেহেরপুরের সচেতন নাগরিক আছি তাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে, একটু সাহস নিয়ে সামনে দাঁড়াতে হবে সাহস নিয়ে সামনে না দাঁড়ালে এই মেহেরপুরের যে সুনাম আছে মেহেরপুরের যে ঐতিহ্য আছে সে ঐতিহ্য বিলিন হতে পারে। তিনি গার্ড অফ ওনার প্রসঙ্গে পথিক বলেন, কোন একজন মানুষের অনেক টাকা হল সে কয়টা কম্বল কিনে কিনে নিয়ে যেয়ে ওই স্কুলের মাস্টারকে মোটামুটি ভুলিয়ে-ভালিয়ে বলেছে যে আমাকে একটু সালাম দিয়ে দেন। তিনি আরো বলেন, সম্মান পাওয়ার যে যোগ্য সে ছাড়া অন্য কাউকে গার্ড অফ অনার দেওয়া যাবে না।
মেহেরপুর প্রতিদিনকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক আতাউর রহমান বলেন, অনলাইন জুয়া পত্রিকায় উঠিয়ে নিয়ে এসেছে। সেখানেই শেষ শেষ করতে চাই না একজন নাগরিক হিসেবে বলতে চাই ডিসি মহোদয়, এসপি মহোদয় আপনারা এখন মেহেরপুরের সন্তান। আপনারা জনগণের সাথে মিশে জনগণের সাথে সাহস দিয়ে কথা বলবেন তবেই এই অন্যায়গুলো প্রতিহত হবে। আমরা জেনেছি বিভিন্ন কাজী অফিসে বাল্যবিবাহ হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে গোপনে, এটা অবশ্যই মেহেরপুরের জন্য কলঙ্ক। কারণ বাল্যবিবাহ মুক্ত মেহেরপুর জেলা ঘোষণা হয়েছিল।
সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিলারা জাহান বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগর খ্যাত মেহেরপুর জেলায় আমরা জন্মগ্রহণ করে করে নিজেকে ধন্য মনে করি এবং গর্ববোধ করি। এই মেহেরপুর জেলা শান্তির জেলা হিসেবে খ্যাত থাকবে এবং পরিচালিত থাকবে এটাই আমাদের কাম্য। আজকের জেলায় যে অবনতি এবং মেহেরপুর জেলায় যে বিশৃঙ্খলা জেলাকে ছোট করার জন্য যে কুচক্রি মহল কাজ করছে তাদেরকে তুলে নিয়ে এসে তাদের মুখোশ খুলে দিয়ে তাদেরকে শাস্তির আওয়াতার আনার দাবি করছি। আমাদের এই জেলায় এক সময় পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লাই চাঁদাবাজি হতো, গুন্ডামি হত মাস্তানি হত এবং প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াতো । আজকে কিন্তু এটা নাই বললেই চলে। আজকে তার উল্টোটা ঘটছে যেখানে যেই মানুষগুলোর আস্থাভাজন যাদের উপরে আমরা সাধারণ মানুষ ভরসা করি যাদের ভরসায় আমরা পথ চলতে পারি সেই মানুষগুলোই সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ভয় দেখিয়ে তাদের মুখ বন্ধ করে রেখেছে। আমরা যেই গণমাধ্যমকে ভরসা করি সেই গণমাধ্যমের কিছু কুচক্রিমহল তারা টিম তৈরি করে এই সমাজের পরিবেশ নষ্ট করছে। তারা পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় গ্রামে গ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমনকি তারা সাপুড়ে কবিরাজ থেকে শুরু করে তাদের কাছে চেয়েও চাঁদা নিয়ে আসছে। প্রশাসন এর জন্য কাজ করছে তাদেরকে ধরছে তাদেরকে আবারও জামিনের আওতায় নিয়ে এসে তারা আবার সেই অপকর্মে কাজে লিপ্ত হচ্ছে।
দিলারা আরো বলেন, হোটেল আটলান্টিক কাণ্ডতে সাংবাদিকসহ অনেকের নাম এসেছে। শুধুমাত্র কয়েকজন পুলিশের অভিযান ধরা পড়েছে। বাকিরা দেদারছে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাদের তারা নির্দোষ হলে সাংবাদিক সম্মেলন করতো পারতো , তা কিন্তু তারা করেনি। এবং তাদের বিরুদ্ধে যদি কেউ ষড়যন্ত্র করে থাকে তারা যদি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে থাকে তাহলে তদন্তের মাধ্যমেও সেটা বেরিয়ে আসুক।