গেল বছরের তুলনায় মেহেরপুরে ভুট্রা আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার তামাক চাষীরা তামাকের আবাদ কমিয়ে ভুট্টা আবাদের দিকে ঝুঁকছে। কয়েক বছর হুইট ব্লাস্ট রোগে গমের আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তামাকের আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়লেও মাটির উর্বরশক্তি হ্রাস পাওয়া এবং পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রতিক্রিয়া বুঝতে পেরে এবছর ভুট্টা আবাদ করে চাষিরা। কৃষি অফিসের সহযোগীতা ও পরামর্শ কাজে লাগিয়ে ভুট্টার ভাল ফলনের আশা করছেন জেলার আবাদিরা।
কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলায় এবছর ভুট্টা আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। গাংনী উপজেলায় ৬০০ হেক্টর ও মুজিব নগর উপজেলায় ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে এবছর ভুট্টার আবাদ হয়েছে। জেলার অনেক তামাক চাষীরা গত বছর তামাক চাষ করে বিক্রির সময় বিভিন্ন তামাক ক্রয় কোম্পানী তামাক ক্রয় করতে গড়িমশি করেন। যার ফলে তামাক চাষিরা তামাক বিক্রি নিয়ে পড়েন বিড়ম্বনায়। এবছর ওই সকল চাষীরা তাদের জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ভুট্টা গাছ অনেক ভাল হয়েছে । প্রতিটি গাছে ৩-৪ টি করে ভুট্টার মোচা হয়েছে। ভাটপাড়া গ্রামের ভুট্টা চাষি আলামিন হোসেন জানান, আমাদের এলাকায় ভুট্টার আবাদের তেমন একটি প্রচোলন ও চাহিদা ছিলনা। বর্তমানে গো-খাদ্য,মাছের খাবার ও পল্ট্রি খাবার হিসেবে ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা বেড়েছ্।ে আমি এবছর প্রথম দু’ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছি। প্রতিটি গাছে ভুট্টার মোচা হয়েছে ৩/৪ টি। ঝড়ের কবলে না পড়লে অনেক ভাল ফলন হবে। ভুট্টা আবাদ করে গত বছর লাভবান হওয়ায় এবছর ভুট্টা আবাদ করেছেন আতিয়ার রহমান মাস্টার। গাংনীর গাড়াডোব গ্রামের কৃষক মোতালেব হোসেন জানান, কয়েক বছর গম আবাদে ফলন বিপর্যয় ঘটেছে। এবার আর ঝুকি না নিয়ে ভুট্টা আবাদ করেছি। ভারি শিলা ভুট্টা পরিপক্ক কালে শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ে ক্ষতি না হলে ভাল ফলন হবে ।
মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিসার আনিসউজ্জামান খান বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় চাষিদের ভুট্টা আবাদে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে। অনেকেই আমাদের পরামর্শ নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছেন। আশাকরি আবাদিরা লাভবান হবেন। গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম সাহাবুদ্দিন বলেন,গাংনীর অনেক এলাকায় এক সয়য় তামাক চাষে আগ্রহী ছিল কৃষকরা। সরকারের বিভিন্ন সাহায্য সহযোগীতা এবং কৃষি প্রণোদনার মাধ্যমে এবছর ভুট্টা আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলন ভাল করতে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে। আশা করি কৃষকরা লাভবান হবে।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নাসরিন পারভিন বলেন, ভুট্টা একটি লাভ জনক আবাদ হিসেবে মেহেরপুর জেলায় পরিচিতি পাচ্ছে। এবছর যারা ভুট্টা আবাদ করেছেন, তাদের দেখাদেখি আগামী বছর অন্যরাও ভুট্টা আবাদ করবেন বলে অনেক চাষিরা মত দিয়েছেন।