মেহেরপুরে যৌতুকের দাবিতে ফাতিমা খাতুন(২৭) নামের এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার সকাল ৭টার দিকে মেহেরপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার তার মৃত্যু হয়। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ গত ১২ তারিখ দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফাতিমা খাতুনকে জোরপূর্বক বিষ পান করায় তার স্বামী বকুল হোসেন ও দেবর পল্টু।
নিহত ফাতিমা খাতুন সদর উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের আসাদুল ইসলামের মেয়ে। তার ৮ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। নিহতরে লাশ মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষ করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
নিহতের খালাতো ভাই কামাল হোসেন জানান, প্রায় দশ বছর আগে মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের রাইন হোসেন এর ছেলে বকুল হোসেন এর সাথে ফাতিমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করতো ফাতিমার স্বামী বকুল ও তার পরিবারের লোকজন। এর মধ্যে কয়েক দফা বেশ কিছু টাকা বকুলকে দেওয়া হয়। সম্প্রতি আবারও টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে বকুল। টাকা দিতে না পারায় গত ১২ জুন ফাতিমাকে বকুল ও তার ভাই পল্টু জোর করে বিষ পান করিয়ে দেয়। পরে তারায় হাসপাতালে নিয়ে এসে আমাদের খবর দেয়। আমরা হাসপাতালে আসার পর তারা পালিয়ে যায়। ফাতিমা যখন বেঁচেছিল তার সাথে আমার কথা হয়েছে। সে বলেছে আমাকে জোর করে বিষ খাইয়ে দিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকে তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন আত্মগোপনে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এর আগেও বেশ কয়েকবার ফাতিমার শুশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য চাপ দিয়েছে। এ জন্য ফাতিমা তার বাপের বাড়ি সুবিদপুর চলে আসে। কিন্তু পরে তার শুশুর বাড়ির লোকজন ফুঁসলিয়ে আবার নিয়ে যায়।
নিহতের চাচাতো ভাই রানা বলেন, আমার বোনকে যৌতুকের দাবিতে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো। তার গায়ে একটি পোড়ার দাগও আছে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাতিমা খাতুন মারা গেছেন। যখন তাকে ভর্তি করা হয় তখন বিষপান করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন বলে পরিবার থেকে বলা হয়েছিল।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি শাহ দারা খান বলেন, আমরা লাশটি ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে। তবে আমাদের প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে ঘটনাটি আত্মহত্যা।