মেহেরপুরে ছড়িয়ে পড়ছে গবাদি পশুর লাম্পি স্কিন ডিজিস (Lumpy Skin Disease ) নামের নতুন এক ধরণের ভাইরাস জনিত রোগ। গত এক মাসে মেহেরপুরে এ পর্যন্ত ৬৩১টি লাম্পি স্কিন ডিজিস রোগে আক্রন্ত গরু চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ২৯৬ টি, গাংনীতে ২১১ টি এবং মুজিবনগরে ১২৪ টি।
প্রাথমিক অবস্থায় অল্প কিছু সংখ্যক গরু আক্রান্ত হলেও ধীরে ধীরে আক্রান্তের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে গবাদি পশু চাষিরা পড়েছে বিপাকে। পশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না বলে জানিয়েছে অনেক চাষি।
পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় সেই সাথে শুক্র-শনি ছুটি থাকায় আরো বেশি ক্ষতির মুখে চাষিরা।
মেহেরপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড পাড়ার আলতাফ হোসেন বলেন, আমার ১টি গাভি ও ১টি বাছুর আছে। কিছুদিন আগে দুটি গরু লাম্পি স্কিন ডিজিস রোগে আক্রান্ত হয়। পরবতিতে মেহেরপুর পশু হাসপালে চিকিৎসা নিলে রোগ ভালো হয়ে যায়।
দিঘির পাড়ার পলাশ বলেন, আমার ৮টি গরু আছে এর মধ্যে ১টি গরু আক্রান্ত হয়েছে। এটির চিকিৎসা চলছে সেই বাকি গুলো নিয়েও আতঙ্কে আছি।
আমঝুপি গ্রামের কাবাদুল বলেন, গত চার দিন আগে গরুর গায়ে ছোট ছোট ক্ষত দেখতে পাই। পরে এগুলো আরো বেশি দেখা যায়। আমার দুইটা গরু এই রোগে আক্রান্ত।
বসন্তপুর গ্রামের কল্পনা বলেন, আমার দুইটা গরু আক্রান্ত। মেহেরপুর পশু হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ওষুধ আনা হয়েছে। কিন্তু ডাক্তার অল্প থাকার কারনে সেবা দিতে কিছুটা দেরি হচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা প্রানী সম্পদ অফিস থেকে জানা যায়, ভিবিডি ভাইরাস এর আক্রমনে এ রোগ হচ্ছে। এ রোগে পশুর মৃত্যু ঝুকি ১ থেকে ২ ভাগ। মেহেরপুর জেলাতে এ পর্যন্ত লাম্পি স্কিন ডিজিস রোগে ৬৩১ টি গরুকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় পশুর চামড়ায় ছোট ছোট গুটি দেখা যায়। পরবর্তিতে এগুলো ক্ষতের সৃষ্টি হয়। কিন্তু নিয়মিত চিকিৎসা করলে এ রোগ ভালো হয়ে যায়। নতুন এই রোগের সাথে অনেকেই পরিচিত না থাকায় বেশি ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
মেহেরপুর সদর উপজেলার ভেটেরনারী সার্জন ডা. নুর আলম বলেন, মেহেরপুরে লাম্পি স্কিন ডিজিস রোগ দেখা দিয়েছে। আমরা এ রোগ প্রতিরোধের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এ রোগ গুলো যেভাবে ছড়াই সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে যেমন মশা, মাছি, আটালি এ গুলো নিয়ন্ত্রণের ব্যাবস্থা করতে হবে। আক্রান্ত পশুকে জ্বর ও ব্যাথানাশক ফ্লুইড থেরাপি আইভি স্যালাইন ও জটিলতা বেশি হলে এন্টিবায়োটিক খাওয়ালে রোগ ভালো হয়ে যায়।
আমাদের পশু হাসপাতাল থেকে সব রকম সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু জনবল কম থাকায় একটু হিমশিম খেতে হচ্ছে। মেহেরপুরে উপ সহকারি প্রানী সম্পদ কর্মকর্ত ৩ জনের স্থলে ১ জন আছে। তিনি জানান, প্রতি ইউনিয়নে ৩ জন করে উপসহকারি প্রয়োজন এবং প্রতি উপজেলায় ৩ জন করে সার্জন প্রয়োজন।
-নিজস্ব প্রতিবেদক