এম এফ রুপক/শাকিল রেজা:
বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে একসঙ্গে ঘর পেল প্রথম ধাপে মেহেরপুরের তিন উপজেলায় ২৬ জন ভ’মিহীন-গৃহহীন পরিবার। শনিবার তিন উপজেলা পরিষদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সুবিধাভোগীদের হাতে ঘরের কাগজ ও চাবি তুলে দেওয়া হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়ালি উদ্বোধনের মাধ্যমে বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, খুলনার বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এসব আধা পাকা ঘর ও জমি। সারা দেশে প্রথম ধাপে ঘর জমিসহ ঘর পেয়েছে ৬৯ হাজার ৯শ ৪ পরিবার।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে তাদের চোখে-মুখে যেন খুশির ঝিলিক। এ যেন ঈদের আনন্দকেও হার মানাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তারা বলেন, নিজের একটি পাকা ঘর ও ভূমি হতে পারে তা আমরা আগে কখনও ভাবিনি। এটিই বিশ্বে গৃহহীন মানুষকে বিনামূল্যে ঘর করে দেওয়ার সবচেয়ে বড় কর্মসূচি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গৃহহীন-ভূমিহীনদের ঘর করে দেওয়ার এত বড় কর্মসূচি পৃথিবীতে আর একটিও নেই। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে নতুন ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ। দেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় মানুষদের মধ্যে যাদের ভূমি নেই তাদের সরকারের খাস জমি থেকে ২ শতাংশ ভিটে এবং ঘর দিচ্ছে সরকার। যাদের ভিটে আছে ঘর নাই তাদের ঘর দিচ্ছে সরকার। প্রতিটি ঘর দুই কক্ষ বিশিষ্ট। এতে দুটি রুম ছাড়াও সামনে একটি বারান্দা, একটি টয়লেট, একটি রান্নাঘর এবং একটি খোলা জায়গা থাকবে।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মুজিবনগর উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ৪ টি ভ’মিহীন-গৃহহীন পরিবারের হাতে জমিসহ ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন। ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজন সরকার। সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল আলমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজ আল আসাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক এ্যাড. ইব্রাহীম শাহীন, পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভট্টাচার্য, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দীন বিশ্বাস, মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাশেম, মুজিবনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মোল্লা প্রমুখ।
অন্যদিকে গাংনী উপজেলা সম্মেলন কক্ষ থেকে ৬টি পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ সবিধাভোগীদের হাতে জমির কাগজসহ ঘরের চাবি তুলে দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এম এ খালেক, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা খাতুনসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম সদরের ১৬ টি ভ’মিহীন-গৃহহীন পরিবারের হাতে জমির কাগজসহ ঘরের চাবি তুলে দেন। উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘর হস্তান্তর করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লতিফুন্নেছা লতাসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
মেহেরপুর জেলায় যে ২৬ পরিবার ঘর পেলো তারা হলেন, মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের আব্বাস আলীর স্ত্রী মমতাজ পারভীন, উজলপুর গ্রামের খুদা বকসের স্ত্রী মেহেননিগা খাতুন, কুতুবপুর গ্রামের মিলন হোসেনের স্ত্রী ফাহিমা খাতুন, শিবপুর গ্রামের হযরত আলীর স্ত্রী জামেরন, উজলপুর গ্রামের জিতুকালামের স্ত্রী বেগম, ইছাখালী গ্রামের সাজাত আলীর স্ত্রী রুপালী খাতুন, গোভীপুর গ্রামের সাদ আলীর স্ত্রী বেদেনা খাতুন,
মেহেরপুর পৌরসভার বেড় পাড়ার কেরামত আলীর স্ত্রী মেরিনা খাতুন, মেহেরপুর পৌর সভার কলেজ পাড়ার মহিরদ্দীন মন্ডল, মেহেরপুর পৌরসভার কলেজ পাড়ার সজলের স্ত্রী রিমা খাতুন, মেহেরপুর কলেজ পাড়ার আঃ মালেকের স্ত্রী করিমন খাতুন, মেহেরপুর পৌর সভার গোহাট পাড়ার আবু হোসেনের স্ত্রী হালিমা খাতুন, দিঘির পাড়ার আবুল হোসেনের স্ত্রী টুনি খাতুন, দিঘির পাড়ার রাইহানের স্ত্রী লাভলী খাতুন, স্টেডিয়াম পাড়ার ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী ফরিদা পারভীন, বেড়পাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী মজিরন খাতুন,
গাংনী উপজেলার, কাজিপুর গ্রামের জহুর আলীর ছেলে ছহির উদ্দিন, কাজিপুর গ্রামের যমুনা খাতুন, কাজিপুর গ্রামের ফেরদৌসি খাতুন, নিশিপুর গ্রামের তহমিনা খাতুন, জুগীরগোফা গ্রামের মৃত নিয়াত আলীর স্ত্রী হাজেরা খাতুন, চেংগাড়া গ্রামের মৃত ইয়াদ আলীর ছেলে জিন্নাত আলী,
মুজিবনগর উপজেলার, মহাজন পুর গ্রামের ফজিলা খাতুন, মহাজনপুর গ্রামের ওশিন খাতুন, মহাজনপুর গ্রামের দাসী খাতুন ও মহাজনপুর গ্রামের খইরন নেছা।
মেপ্র/এমএফআর