সিরাজুদ্দোজা পাভেল:
মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী থেকে কোলা ভায়া আশরাফপুর সড়ক মেরামত কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে মেরামত করা হয়েছে রাস্তাটি।
মুজিবনগর উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে এবং সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রাম কোলা ভায়া আশরাফপুর সড়ক মেরামত ভিআরআরপি প্রকল্পের ১৮২০ মিঃ রাস্তা চব্বিশ লক্ষ এক হাজার তিনশত তিরাশি টাকা ব্যয়ে সড়ক মেরামতের কাজ চলছে। কাজটি পায় কুষ্টিয়া কুমারখালির ঠিকাদার নাজিম উদ্দিন।
দরপত্র অনুযায়ী প্রকল্প এলাকায় কাজের তথ্য সম্বলিত সাইনবোর্ড লাগানোর কথা থাকলেও তা লাগানো হয়নি। এছাড়াও নিম্মমানের ইট ব্যবহারের ফলে সড়কটির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রকল্প এলাকার বাসিন্দা পিন্টু, আতিকুল ইসলাম, আশরাফুল সহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, সড়কটির কাজে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। তদারকি কর্মকর্তা না থাকায় ঠিকাদার নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করছে। নিম্নমানের ইট দিয়ে রোলিং করা হয়েছে এই রাস্তায়। বালির বিষয়টা জানিনা তবে মাটিযুক্ত বালি ব্যবহার করা হয়েছে। রাস্তার সাইডে যে ইট দিয়েছে তারমধ্যে অনেক ইট আছে দুই ও তিন নম্বর।
এলাকার মোশারফ হোসেন বলেন, এখানে দুর্বল ইট দিয়ে কাজ করা হয়েছে। এ ধরণের ইট দিয়ে কাজ করার চেয়ে মাটির রাস্তায় চলাচল করা অনেক ভালো কারণ কিছুদিন পর রাস্তার আগের যে অবস্থা ছিলো তাই হয়ে যাবে।
এলাকার আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা বলেছিলাম রাস্তাটি নিচু করতে। রাস্তাটি নিচু করলে আমাদের ভালো হতো। ইটের যে অবস্থা আগামী বছর পর্যন্ত রাস্তা টিকবে বলে আমার মনে হয়না।
সেন্টু বলেন, সড়কের পাশে আমার জমি আছে। প্রতিদিনই জমিতে আসতে হয়। আমি যতটুকু দেখেছি রাস্তার নিচে একেবারেই নিম্নমানের ইট দিয়েছে। উপরে কিছু ভালো ইট আছে। যার ভিতরে খারাপ ওপরে ভালো দিয়ে কি হবে। এক কথায় মাকালের ফলের মত অবস্থা।
নিম্নমানের ইট ব্যবহারের বিষয়ে নিষেধ করেছন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চাষী মানুষ আমাদের কথা কি তারা শোনে।
প্রকল্প এলাকার মাঠে কাজ করা ইসমাইল হোসেন বলেন, রাস্তা তৈরিতে অধিকাংশ নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। ঠিকাদারের লোকজন তাদের ইচ্ছা মতো কাজ করেছে। তদারকির লোক না থাকলে যা হয়। তবে উপরিভাগে ভালো ইট দেওয়া হয়েছে।
রাস্তার ঠিকাদার নাজিম উদ্দিন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কাজ আমার নামে কিন্তু কাজ হ্যান্ডওভার করা হয়েছে জাকির ভাইকে। ওনারাই ডিল করছে এবং ওনারাই সব টাকা পয়সা দিয়ে কাজ করছে।
সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে জানালে তিনি বলেন, এটা আপনার ভুল ধারণা। আমার কাজে কোন খারাপ কাজ করতে পারবে না। নিম্নমানের ইট কেমন হয় আমরা জানি। ইট কেনার সময় আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম। আপনার কোন বক্তব্য থাকলে তাদের সাথে আলাপ করেন।
এসময় জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নাম্বার চাইলে তিনি বলেন, এখন আমি একটু বাইরে আছি পরে ফোন করেন।
মুজিবনগর উপজেলা প্রকৌশলী শাহিন আক্তার জানান, ওই রাস্তার ছবিটা নিয়ে আসেন অফিসে, কারণ ওই রাস্তায় আমি নিজে গিয়েছি, আমার কাছে রাস্তার ছবি আছে। রাস্তায় উপরে যে ইট আমরা দিয়েছি সেটা নিম্নমানের হওয়ার কথা না। আগে (নিচে) যে ইট দেওয়া হয়েছে সেটা নিম্নমানের হতে পারে। কিন্তু আমি যে ইট দিয়েছি সেই ইট খারাপ হওয়ার কোন সুযোগ নাই। তবে নিচের ইট নিম্নমানের হতে পারে বলে তিনি স্বীকার করেন।