বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম বলেছেন, জাতীর জনকের কাঙ্খিত স্বপ্ন একটি স্বাধীন সার্ভৌম রাষ্ট্র তার যৌক্তিতা তুলে তার স্বপক্ষে সারা বিশ্বের বিবেককে সংগঠিত করেছিল মুজিবনগর সরকার।
সে সময় ভারত বর্ষের জনগণের প্রধানমন্ত্রী আমাদের সাথে ছিল। তাদের সহযোগীতায় এই মুজিবনগরের বৈদ্যনাথ তলার আম্রকাননে শপথ অনুষ্ঠানটি সফলভাবে করা সম্ভব হয়েছিল। মুজিবনগর সরকার সারা বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে উৎসাহ উজ্জিবিত করেছে।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে বৈদ্যনাথতলা আম্রকাননের শেখ হাসিনা মঞ্চে আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাহাউদ্দীন নাসিম এসব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন মুক্তির পক্ষে লড়াই সংগ্রাম করেছেন। ২৪ বছর পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী, হানাদার বাহিনীর সমর্থক পাকিস্থানী সরকার, সামরিক সরকার, আয়ূব, ইয়াহিয়া এবং জিন্নার প্রেত্মাত্বাদের নিস্পেশন, নিপীড়ন ও শোষণের হাত থেকে বাঙালী জাতীকে ও বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য লড়েছেন।
জাতীর পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য সেদিন বাংলার অভূক্ত পাগল জনতা জাতীর জনকের ২৬ মার্চের সেই ঐতিহাসিক স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণার আহবানে সাড়া দিয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক এমপি, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দীয় আওয়ামী লীগের সদস্য পারভীন জামান কল্পনা এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি।
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেকের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি। উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাহাউদ্দীন নাসিম আরো বলেন, অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, স্বাধীনতার ঘোষক দাবী করেন। জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট পাকিস্থানী আইএসআই এর এজেন্টদের আন্তর্জাতিক ও দেশীয় চক্রান্তকারীদের সমন্বয়ে জাতীর পিতাকে হত্যা করে। জতির পিতাকে হত্যা করে বাংলাদেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও সার্বোভৌমত্বকে বিপন্ন করে বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্থানীর আদলে পাকিস্থানী বাংলাদেশ বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। জাতির পিতাকে হত্যা করার পরে খুনি জিয়া ও মুস্তাক গঙরা নানাভাবে পাকিস্থানীদের পৃষ্টপোষকতায় পরামর্শে বাংলাদেশকে পাকিস্থানী বাংলাদেশ বানানোর চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, ইতিহাস বিকৃত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংশ করে। অসম্প্রদায়ীক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ একটি অসম্প্রদায়ীক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য ত্রিশ লক্ষ শহীদ তাদের জীবন দিয়েছেন। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা সেদিন জাতির পিতাকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন সার্বভৌম এই ভূ’খন্ডটিকে পাকিস্থনী তাবেদারদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগমনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এবং সকল প্রগতিশীল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ঐ পাকিস্থানী প্রেত্মত্বা জিয়া এবং বিএনপি জামায়াতীদের মোকাবেলা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই বাংলাদেশকে আবারো ঘুরিয়ে এনেছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি প্রগতিশীল ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এই উন্নয়নশীল রাষ্ট্র যার প্রবৃদ্ধি গ্রথ অর্থনীতিক ভিত্তি অনেক শক্তিশালী। বিএনপি বাংলাদেশকে শ্রীলংকার মত দেওলিয়া বাংলাদেশ দেখতে চাই।
তারা আজ দেশের উন্নয়নে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করে বাংলাদেশকে ব্যার্থ করতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকারকে তারা যে কোনোভাবে বিদায় করে পট পরিবর্তন করে পুনরায় সাম্প্রদায়ীক ও ধর্মান্ধ শক্তিদের রাজনৈতিকভাবে অপব্যবহার করে পট পরিবর্তন করে দেশের শাসনভাব হাতে নিতে চাই।
তিনি বলেন, দূর্ণীতিবাজ লুটেরারা, সাম্প্রদায়ীক শক্তি যারা বার বার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপরে আঘাঁত হানতে চাই শান্তিপ্রিয় ও শান্তি সম্পৃতির বাংলাদেশের সম্পৃতি বিনষ্ট করে জণগণের ভিতরে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চাই। সেই অপরাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। যে কোনো মূল্যে এই অপশক্তিকে মোকাবেলা করতে হবে।
তিনি বলেন, যারা মুজিবনগর দিবস মানেনা, মুজিবনগর দিবস পালন করেনা তারা মুক্তিযুদ্ধের শক্তির পক্ষে নয়। তারা স্বাধীনতার শক্তির পক্ষের দাবী করে, বিএনপিরা জামায়াতীদের সাথে আঁতাত করে, ধর্ম নিয়ে যারা রাজনীতি করে বিএনপি তাদের সাথেই হাত মেলায়। তাদের এই দ্বিচারিতা, তাদের এই অপরাজনীতি বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে। তারা প্রতিদিন অপপ্রচর দেশের স্বাধীনতা ও সাবভৌমত্বের প্রতি যাদের শ্রদ্ধাবোধ নেই এই অপশক্তিকে যে কোনো মুল্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবেল করতে হবে।যোগ দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন জেলার এমপিসহ কেন্দীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।