ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন ১৯ জুলাই কবি নজরুল সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন কাউসার ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক হত্যা মামলায় জেমস স্বপন মল্লিক বাবুকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
গতকাল বুধবার রাজধানীর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আসামী জেমস স্বপন মল্লিক বাবু কিডনি প্রতিস্থাপনের রোগী হওয়ায় তাকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য জেল সুপারকে নির্দেশ দেন। জেমস স্বপন মল্লিক বাবু মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের ব্রজেন মল্লিকের ছেলে। তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য। এর আগে গত সোমবার সুত্রাপুর থানা পুলিশের একটি টিম সদও ঘাট এলাকা থেকে জেমস স্বপন মল্লিককে আটক করে।
গত ২০ আগস্ট নাসরিন খাতুন নামের এক নারী বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগ নেতা ও পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ ১৩ জনকে নামিয় এবং অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামী করে সুত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় জেমস স্বপন মল্লিক বাবুকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এদিকে, বাবাকে নির্দোষ দাবী করে জেমস স্বপন মল্লিক বাবুর দুই শিশুকন্যা সোশ্যাল মিডিয়ায় মুক্তির দাবি জানিয়েছে সরকারের কাছে। তাদেও দাবীর সাথে অনেকের সহমত প্রকাশ করে মুক্তি চেয়েছেন।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, আসামীদের প্রত্যক্ষ মদদে ও পরিকল্পনায় পিওএম-এ হতে নিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা ও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্চাসেবক লীগ, মহিলা লীগ ও তাহাদের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের উপর অতর্কিতভাবে ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র, চাপাতি, দা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়া আক্রমণ শুরু করিলে ঘটনাস্থলে পথচারী ও সাধারণ লোকজন হতভম্ব হইয়া দিগি¦দিক দৌড়াইতে থাকে এবং হামলাকারীরা ঐসময় এলোপাথারী গুলি করিতে থাকিলে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়, অনেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হইয়া আহত হয়। উক্ত সময় হামলাকারীদের গুলিতে কবি নজরুল সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন কাউসার মাথায় গুলিবিদ্ধ হইয়া ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে এবং ওমর ফারুক শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী বুকের ডান পাশে গুলিবিদ্ধ হয় এবং তাহাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
যেহেতু ছাত্র-জনতার ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবীতে শাড়িপূর্ণ আন্দোলনে কোনরূপ উস্কানী ছাড়াই আজিতে বর্ণিত আসামীদের নির্দেশে ও মদদে অজ্ঞাতনামা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগ ও তাহাদেও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও পিওএম-এ হতে নিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা প্রকাশ্যে লোকারণ্য রাস্তার উপর অতর্কিতভাবে ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র, চাপাতি, দা দিয়া আক্রমণ করিয়া ও আগ্নেয়াস্ত্র যারা গুলি ফরিয়া ইকরাম হোসেন কাউসার ও ওমর ফারুককে হত্যা করিয়াছে।