জয়ীদের অনেক নায়ক থাকে। ভারত দলেও আছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মিশন শেষে নায়কের তালিকা করলে সবার ওপরে থাকবেন বিরাট কোহলি, এরপর রোহিত শর্মা। কেউ কেউ বরুণ চক্রবর্তীর নাম বলবেন। কেউ শোনাবেন হার্ষিত রানা কিংবা কুলদীপ যাদবের কথা। কিন্তু একজন এমন আছেন, যিনি নিরবে খেলে গেছেন। প্রশংসা যা পাবার তা তো পায়নি, উল্টো সমালোচিত হয়েছিলেন। রোহিত ব্রিগেডে তিনি আনসাং হিরোও।
বলা হচ্ছে কেএল রাহুল তথা লোকেশ রাহুলের নাম। ভারতে শিরোপা ঘরে তোলার মিশনে আনকোরা থেকেছেন। উইকেটের পেছনে নীরবে সামলে গেছেন দায়িত্ব। ব্যাটিংয়ে যখন সুযোগ এসেছে, দলকে দিয়েছেন উজাড় করে। তবুও তাকে নিয়ে সমালোচনা হচ্ছিল না, রান পাচ্ছেন না। দলকে শেষদিকে দ্রুত জেতাতে কার্যকর ব্যাটিংটাও নাকি হচ্ছে না।
রোববার দুবাইয়ে সব সমালোচনার জবাব এক তুড়িতে উড়িয়েছেন রাহুল। রোহিত শর্মার ৭৬ রান ছাপিয়ে গেছে তার ত্রিশ ছাড়ানো রানে। বিপদে দলের হাল ধরেছেন, লড়েছেন এবং শিরোপা জিতিয়েই তবে ফিরেছেন। সদ্য শেষ হওয়া আসরে একটাও ফিফটি নেই রাহুলের। সমালোচনাটা সেই জায়গায়। তবে ৫ ম্যাচের চারবারেই রাহুল ছিলেন অপরাজিত। দলকে জিতিয়ে তবেই ফিরেছেন। অথচ তার একাদশেই থাকার কথা ছিল না। ঋশভ পান্ত ছিলেন উইকেটকিপার হিসেবে প্রথম চয়েজ। তবে রাহুল তার একাগ্রতা ও নিষ্ঠা দিয়ে বুঝিয়েছেন, কেন তিনি দলে।
ট্রফির মিশনে রাহুল প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন ৪১ রানে। বাংলাদেশের পর নিউজিল্যান্ডের বোলাররাও তাকে আউট করতে পারেনি। গ্রুপ পর্বে কিউইদের বিপক্ষে করেন ২৩ রান। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে থাকেন ৪২ রানে অপরাজিত। ফাইনালে ৩৪ রানে নট আউট। ছয় নম্বরে নেমে মোটে ১৪০ রান। সেমির পর ফাইনালেও দলকে টেনেছেন প্রশস্ত কাঁধে।
ইংরেজিতে একটি কথা আছে, ‘আনসাং হিরো।’ অর্থাৎ নীরব নায়ক। রাহুলও তাই। শুধু ব্যাট নয়, অস্থায়ী উইকেটকিপার হিসেবে উইকেটের পেছনেও ছিলেন সমান পারদর্শী। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাঁচটি ক্যাচ নেওয়ার পাশাপাশি একটি স্ট্যাম্পিংও করেছেন। রাহুলকে দুহাত ভরে দিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। দলে জায়গাটাও আপাতত পাকা হচ্ছে। এবার আড়াল থেকে বেরিয়ে মূল নায়ক হওয়ার পালা। রাহুলের বিশ্বাস তিনি পারবেন।
সূত্র: যুগান্তর