সিরাজুদ্দোজা পাভেল
করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। শর্ত মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও ইনকামের চাকা ঘুরছে না দিনমজুরদের। পরিবার-পরিজন নিয়ে এ যেন এক অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে খেটে খাওয়া মানুষের। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। অভাবের তাড়নায় করোনা উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বের হলেও কাজ না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের।
মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকায় প্রতিদিন প্রায় শতাধিক দিনমজুর আসে কাজের সন্ধানে। যার দিনমজুর দরকার, তিনি এখানে এসে দিনমজুর ভাড়া করে নিয়ে যান। দিনমজুরেরাও গড়ে দৈনিক ৪০০-৪৫০ টাকা চুক্তিতে কাজ পেয়ে যান। তবে সাধারণ লকডাউন থেকে শুরু করে গত ১৪ এপ্রিল সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। শ্রম বিক্রির জন্য দিনমজুরেরা বসে অপেক্ষা করলেও নিয়োগকর্তার দেখা নেই। কাজ জুটেছে হাতেগোনা কয়েকজনের। বাকিদের ফিরে যেতে হচ্ছে কাজ না পেয়ে। কর্মহীনদের কপালে এখন দুশ্চিন্তার ভাঁজ। দিনমজুরদের জমানো অর্থ নেই বললেই চলে। ফলে পরিবারের মুখে কী তুলে দেবেন সেই দুশ্চিন্তা তাদের তাড়া করে ফিরছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় গত ৫ এপ্রিল থেকে সাতদিনের লকডাউন বা বিধি-নিষেধ জারি করে সরকার। এই বিধি-নিষেধের মেয়াদ শেষ হয় ১২ এপ্রিল। ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয় সর্বাত্বক কঠোর লকডাউন। লকডাউনে অফিস আদালত বন্ধ। গণপরিবহন শ্রমিকেরা এখন সবাই বেকার। স্বল্প পরিসরে স্থানভেদে রিকশা ও ইজিবাইক চললেও রাস্তাঘাটে যাত্রী কম। ফলে স্বাভাবিক আয় হয়নি তাদের।
কাজের সন্ধানে আসা সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়নের জিয়ারুল (৪০), আব্দুল কুদ্দুস (৪৫), রাজাপুর গ্রামের মহাসিন (৬০) আব্দুর সাত্তার (৬০) আমদাহ গ্রামের আঃ মান্নান (৬০) সার্থক (৫০) সেলিম (২৫) বকুল (৩৫) সহ একাধিক দিনমজুর বলেন, ওই সময় অনেকেই পরিস্থিতি সামলাতে আগের জমানো টাকা খরচ করেছেন। অনেকে আবার চলেছেন ঋণ করে। সেই দশা কাটার আগেই এবার দ্বিতীয় দফা লকডাউন। অনেকেরই নূন আনতে পানতা ফুরানোর সময় যাচ্ছে।
রফিকুল (৫০) নামের এক দিনমজুর বলেন, পর পর আজ দু’দিন কাজ পাইনি, আজকে কাজ না হলে বাড়িতে খাবার হবে না। প্রথম লকডাউন থেকেই কাজের অবস্থা ভালো না। এবার আবার কঠোর লকডাউন। কপালে কি আছে আল্লাহ জানে।
দিনমজুর সাদেক আলী (৫৫) বলেন, অভাবে অনটনে থাকলেও এখনও পযর্ন্ত সরকারের তরফ থেকে বা এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার কেউ খোঁজ নেয়নি। খোঁজ নেবেই বা কেন এখন তো আর ভোট না। আমাদের কদর তো শুধু ভোটের সময়। এই মূহুর্তে আমাদের সাহয্েযর খুব দরকার।