মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আব্দুল বাকীর ছেলে ও কুলবাড়ীয়া শহীদ হারেজ উদ্দীন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু আব্দুল্লাহ (মিলন) পুনরায় মাদক ব্যবসার দায়ে আটক হওয়ায় নিন্দার ঝড় বইছে।
উপজেলায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা এরকম শিক্ষক জাতীর জন্য কলঙ্ক বলেও নিন্দা প্রকাশ করেন বিভিন্ন সচেতন মহল।
জানাগেছে, গেলো ১৪ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে দেবীপুর গ্রামের একটি বাশঁবাগান ভারতীয় অবৈধ ফেন্সিডিল বিক্রয় করার সময় ৬০ বোতল ফেন্সিডিলসহ আবু আব্দুল্লাহ মিলন (৪০)কে আটক করে মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রবিউল ইসলাম জানান, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে আবু আব্দুল্লাহ (মিলন) ফেনসিডিল বিক্রির উদ্দেশ্যে দেবীপুর গ্রামের খেজমত আলীর বাঁশবাগানের নিচে অবস্থান করছিল।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা ডিবি পুলিশের এস আই মিরজাহুর রহমান ও এএস আই মাহাতাব সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে অভিযান চালায়। অভিযানে তাকে আটক করা হয়। পরে আবু আব্দুল্লাহ (মিলন) এর কাছ থেকে ৬০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। তার নামে গাংনী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ ধারা-৩৬(১) এর ১৪(গ)/৪১একটি মামলা হয়েছে। এজাহারে অভিযুক্ত মামলা নম্বর ১৩/২৮২ তারিখ-১৪/১২/২০১৯ইং ।
অপরদিকে গাংনী থানা সূত্র জানায় গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আব্দুল বাকীর ছেলে ও কুলবাড়ীয়া শহীদ হারেজ উদ্দীন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু আব্দুল্লাহ (মিলন) মাদক ব্যবসার দায়ে আটক হয়। এর আগেও মাদক মামলায় এজাহারে অভিযুক্ত ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাতে তাকে আটক করে। গাংনী থানার এফ আই আর নং ১১ তারিখ-২৫ ডিসেম্বর ২০১৮। ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা-১৯(১)এর ৩(ক)/১৯ (৪)। হাজত থেকে জামিনে এসেও মাদক ব্যবসা চালিয়ে গেছেন বলেই মন্তব্য করছেন অনেকেই।
সরেজমিনে তার কর্মস্থল থেকে জানাযায়, ২০১৮ সালে মাদকসহ আটক হলেও সে জামিনে এসে বিদ্যালয়ে যোগদান করে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা খাতায় জানুয়ারী ১ তারিখ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত সাইনের স্থান ফাকা রেখে ২৬ তারিখ থেকেই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা হয়েছে। তৎকালীন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জেসের আলীর ১৭/০২/১৯ইং তারিখে স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশে বলা হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ইং তারিখে আটক হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
চুড়ান্ত প্রতিবেদ না হওয়া পর্যন্ত সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। সেই অফিস আদেশ হাজিরা খাতার শেষের পাতায় রাখা হয়েছে। মাদকসহ হাতেনাতে আটক হওয়ার পরেও তখনই কেনো কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি এবিষয়ে কেউই কিছু বলতে পারেনি।
প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ বলেন আমি ঘটনা জানার পরেই অফিসারকে অবহিত করি। ইতোপূর্বে যখন আটক হয়েছিলো তখনই আমি শিক্ষা অফিসে জানিয়েছি তার বিরুদ্ধে যে কোন ব্যবস্থা নিতে পারে উপজেলা বা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এহসানুল হাবিব জানান, আমি ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে ১৫ ডিসেম্বর জানতে পারি আমি তখনই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করতে পত্র প্রেরণ করেছি। পরবর্তিতে জেলা অফিস থেকে যে নির্দেশনা আসবে সেটাই বাস্তবায়ন করা হবে। তবে এটা খুবই লজ্জাজনক বিষয়। মাদকের বিরুদ্ধে সরকার কঠিন অবস্থানে আর একজন শিক্ষক সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরী করে এরকম ঘৃণ্য কাজ কিভাবে করে?
-নিজস্ব প্রতিনিধি