ছয় ঋতুর বাংলাদেশে কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এ দুই মাস হেমন্তকাল, হেমন্ত মানেই শীতের পূর্বাভাস। রাত শেষে ঠাণ্ডা হিমেল বাতাস আর ভোরে ঘাসে ঘাসে জমে থাকা শিশিরবিন্দুই বলে দেয় শীত আসছে।
মেহেরপুরে শীতের আগমনী বার্তা আসার সঙ্গে সঙ্গে ধুনারীদের (লেপ-তোষক তৈরির কারিগর) তুলা ছাঁটাই ও লেপ তৈরির কাজে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে।
সপ্তাহ দুয়েক ধরে মেহেরপুর জেলায় হালকা শীত ও কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। সামনে পৌষ ও মাঘ মাস শীতকাল। তাই মেহেরপুর সদর এবং গ্রামাঞ্চলের মানুষ আগে ভাগেই লেপ, তোষক বানাতে শুরু করেছে।
কেউ কেউ পুরনো লেপ ভেঙে নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ নতুন তুলা দিয়ে তৈরি করে নিচ্ছে লেপ ও তোষক।
মেহেরপুরের আমদাহ গ্রামের লেপ তোষকের কারিগর কছিমদ্দীন ও আনসার আলী বলেন, আমরা প্রায় ৩০ বছর ধরে ধুনারীর কাজ করছি। প্রতিবছরই প্রায় ৬ মাস অন্য কাজ করে থাকি। শীত মৌসুমে লেপ-তোষকের দোকানে প্রতি দিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় আবার ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা হিসেবেও লেপ, তোষক তৈরির কাজ করে থাকি। হেমন্তের প্রথম থেকেই ধুনারী কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যায় আমাদের।
মেহেরপুর হোটেল বাজারের লেপ-তোষকের দোকান মালিক জনি জানান, মহামারী করোনা ভাইরাসে লক ডাউন থাকার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর ঝুটের দাম যেমন বেশি ঠিক তেমনি তুলার দামও বেশি। তবুও থেমে নেই এই বছরের লেপ, তোষক বানানোর কাজ। সারা বছরের চেয়ে শীতের এ তিন মাস বেচাকেনা একটু বেশি হয়। তাই ক্রেতাদের কথা ভেবে কাজের গুণগতমান বজায় রেখে অর্ডারি কাজের পাশাপাশি রেডিমেড জিনিসও বিক্রি করছি।
এদিকে শহর ও গ্রামে হাঁক-ডাক বেড়েছে মৌসুমী ফেরিওয়ালাদের, যারা শীতে ভ্যানে করে লেপ-তোষক বিক্রিতে নেমে পড়েন। মহাজনদের কাছে কমিশনে কিনে বিক্রি করেন গ্রামে ও শহরে। এসব ফেরিওয়ালা নগদ টাকা ছাড়াও কিস্তিতে লেপ-তোষক বেচেন। শীত মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই কিস্তির সে টাকা পরিশোধ করেন পুরুষ ও গৃহবধূ ক্রেতারা।
মেহেরপুর সদরের বাজার গুলো ঘুরে দেখা গেছে, এবার লেপ-তোষক তৈরির মূল উপাদান কার্পাস তুলা ২০০ টাকা, বোমা তুলা ১২০ টাকা, চাদর তুলা ৮০-৯০ টাকা এবং গার্মেন্টস (ঝুট) তুলা ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।