সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও ৫টি পণ্য বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে মেহেরপুরে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেয়ে রবিবার থেকে বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিসি।
নিত্যপণ্য ডিম, আলু ও পেয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় গত বৃহস্পতিবার প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা, আলুর কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা , দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা, সয়াবিন তেল ১৫৯ থেকে ১৬৯ টাকা, চিনি ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু গতকালও মেহেরপুরের বিভিন্ন বাজার ও পাড়া মহল্লার দোকানগুলো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসকল পণ্য।
জেলা শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় পাইকারিতে বড় বাজারে এলসি পেয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা,দেশি পেয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, আলু ৪৫ টাকা, চিনি ১৩০ টাকা, সয়াবিন তেল ১৭০ টাকা লিটার, পামওয়েল ১৪৫ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাড়া মহল্লার মুদি দোকানে এলসির পেয়াজ ৮০টাকা, দেশি পেয়াজ ৯০ টাকা, আলু ৪৫ টাকা, ডিম আকার ভেদে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা হালি, চিনি ১৩০ টাকা কেজি, সয়াবিন তেল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা লিটার ও পামওয়েল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে।
বড়বাজারের আলু ও পেয়াজের পায়কারী ব্যবসায়ী সিরাজ বানিজ্যালয়ের সত্ত্বাধিকারী সিরাজ জানান, জেলা প্রশাসন থেকে ব্যবসায়ীদের ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছে বেশি দামে ক্রয়কৃত মুজুদে থাকা পণ্য বিক্রি করে শেষ করতে। সরকার নির্ধারিত মুল্যে নতুন সবজির চালান রবিবার থেকে সরকার নির্ধারিত মুল্যে বিক্রি করা হবে।
মেহেরপুর বড়বাজার কাচাবাজারে ক্রেতা আরিফুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সাধারন চাকুরি করি। বর্তমান বাজারে সংসারের চাহিদা মেটাতে যেয়ে বেতনের পাশাপাশি সঞ্চয় ভেঙে চলতে হচ্ছে। ‘
হোটেল বাজারে মুদি দোকানে আসা ক্রেতা শামিম বলেন, বর্তমান বাজারে প্রতিটি পন্য আড়ত থেকে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত আসতে আসতে মূল্য ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে যায়। এগুলো দেখার কেউ নেই। আর নিউজ করে কি করবেন। দু’এক দিন লোক দেখানো অভিজান হবে। এরপর আবার বাজার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে অসম্ভব।
বাজার করতে আসা রিক্সা চালক আব্দুল মালেক ক্ষোভের সাথে বলেন,’ সারাদিন রিক্সা চালিয়েও এখন দুইবেলার খাবারের যোগান হয়না। ব্যবসায়িরা এতো খারাপ, ওরা ৫০০ টাকার পণ্য বিক্রি করলে ৩০০ টাকা লাভ করে।’
বড় বাজারের সবজি দোকানী মন্টু বলেন, আমার পাইকারি আড়তেই নির্ধারিত দামে মালামাল পাইনা। তাহলে ঐ দামে বিক্রি করবো কিভাবে।
মল্লিক পাড়ার মুদি দোকানি টোকন বলেন, আমি প্রতিদিন সকালে আড়ৎ থেকে পণ্য কিনে এনে আমার দোকানে বিক্রি করি। আড়ৎ মূল্যের সাথে পরিবহনের খরচ থাকে। এর পর হয়তো পণ্যভেদে কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা লাভ হয়। আসলে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে মহাজন ও পাইকারি পর্যায়ে।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক শামিম হাসান বলেন, ‘ বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের দেওয়া চিঠির প্রেক্ষিতে মেহেরপুর জেলার ব্যবসায়ীদের সরকার নির্ধারিত মুল্যে পন্য বিক্রয় করা সহ দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন ও ক্রয়কৃত পণ্যের ভাওচার সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার সকাল থেকেই বাজার নিয়ন্ত্রণে জেলাপ্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।