দেশের মাটিতে বাণিজ্যিকভাবে সুমিষ্ট চাইনিজ জাতের কমলা চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন চুয়াডাঙ্গার চাষীরা। এদের মধ্যে অনেক শিক্ষিত তরুণও আছেন। তাদেরই একজন জীবননগরের তরুণ চাষী মো. আসাদুজ্জামান। তার এ সাফল্যের গল্প শুনতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে আগ্রহী চাষীরা ছুটে আসছেন তার কাছে।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মো. আসাদুজ্জামানের কমলা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে ছোট ছোট কমলা। চকচকে কমলা রঙের এ ফল দেখে যে কেউই অবাক হবেন। কারণ চায়না থেকে আমদানি করা ছোট জাতে যে কমলা আমাদের বাজারে পাওয়া যায়, সেই কমলাই এখন দেশের মাটিতে চাষ হচ্ছে। এ কমলা দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন সুস্বাদু ও সুমিষ্ট।
মো. আসাদুজ্জামান জানান, ২০১৯ সালে নিজের চার বিঘা জমিতে ১০০ চাইনিজ কমলার চারা রোপন করেন তিনি। সেসময় তিনি জানতেনও না, এ গাছে কেমন ফল হবে। প্রায় দু’বছরের মাথায় ২০০০ সালের শেষ দিকে গাছে ফল আসে। এতে আত্মবিশ^াসী হয়ে ওঠেন তিনি।
তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে কমলার আবাদ করতে প্রথম ১০/১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সামান্য কিছু পরিচর্যা করলেই এ চাষে সাফল্য আসে। কমলা চাষে পোকা-মাকড়ের আক্রমণও কম। একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছ থেকে এক মৌসুমে ৩০-৩৫ কেজি কমলা পাওয়া সম্ভব।
জীবননগরের গোয়ালপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম সম্প্রতি ইসলামপুরের কমলা বাগানে আসেন আসাদুজ্জামানের সফলতা দেখতে। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও আধুনিক চাষাবাদের সাথে সম্পৃক্ত হতে ইচ্ছুক। এ কারণে জেলার যেখানেই ব্যতিক্রমী চাষাবাদের খবর পাই সেখানেই সেটি দেখতে যাই। আসাদুজ্জামানের কমলা বাগান দেখে আমি মুগ্ধ।’
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সুফি মো. রফিকুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় কমলা চাষের সাফল্যে অনেকেই অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। এ কারণে এ চাষকে সম্প্রসারিত করার জন্য তারাও সব ধরনের পরামর্শ ও প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাদের মতে, এ চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া গেলে দেশে উৎপাদিত বিষমুক্ত ফল দিয়েই বিদেশী ফলের চাহিদা পূরণ করা যাবে।