ভোটের আর মাত্র দুদিন বাকী আগামী ৩০ জানুয়ারী ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। মাইক আর মিছিলের শব্দে মূখর ছিল হরিণাকুণ্ডু পৌর এলাকা। পৌরসভায় মেয়র পদে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।
প্রচার প্রচারণায় নৌকা প্রতীক এগিয়ে থাকলেও, ধানেরশীষ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর জগ প্রতীকের ত্রীমূখী লাড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান পৌরসভার কাউন্সিলর ফারুক হোসেনের পক্ষে রয়েছে দলের সর্বোচ্চ সমর্থণ।
তাছাড়া ক্ষমতাসিন দলের প্রার্থী পাশ করলে এলাকার বেশী উন্নয়ন হবে বলে সাধারণ ভোটাররা মনে করেন। দলের নেতা কর্মীরাও মানুষের দ্বারে দ্বারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা দিয়ে ভোট চাচ্ছেন, একারণে পাশ করার ব্যাপারে তারা শতভাগ আশাবাদি।
অন্য দিকে বিএনপি একসময়ের দখলে থাকা এই পৌরসভাটি পূনরুদ্ধারের চেষ্ঠা করছেন, তারা মনে করেন পর পর দু’বার জোর করে ভোট কেঁটে তাদের কে ফেল করানো হয়েছে এবার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তারাই পাশ করবেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর রয়েছে পারিবারিক ঐতিহ্য তার বাবা ছিলেন এলাকার দীর্ঘদিনের ইউপি চেয়ারম্যান, পরবর্তীতে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাই ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বর্তমান আওয়ামী লীগের সদ্য বহিস্কৃত নেতা।
পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সহ-সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও বর্তমান মেয়রসহ ৬জনকে বহিস্কার করা হয়েছে সে কারণে অনেকেই মনে করেন আওয়ামী লীগে বিভেদ রয়েছে তাই আওয়ামী লীগের একটি বৃহৎ অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেবেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা বলেন বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের ভয় ভীতি প্রদর্শন করছে এবং ভোট সেন্টারে না যাওয়ার জন্য চাপ দেচ্ছেন ক্ষমতাসীন, প্রচার প্রচারনায় বাঁধা প্রদানসহ নির্বাচনী অফিস ও মাইক ভাংচুর করা হচ্ছে। তারা মনে করে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।
এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী নাসির উদ্দীন ভাল ভোট পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন বলে তিনি আশাবাদী।
সববিবেচনায় সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে ধারণা করা হচ্ছে এবার মেয়র পদে নির্বাচনে লড়ায় হবে ত্রীমূখী।
গত ১১ জানুয়ারী প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা জোরেশোরে চালাচ্ছেন প্রচার প্রচারণা। চলছে প্রার্থীদের নিয়ে ভোটারদের নানামূখী আলোচনা। কেউ কেউ আবার অবাধ সুষ্ঠু ভোট গ্রহন নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করছেন।
তবে প্রশাসনের রয়েছে তিক্ষè নজরদারী, অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে বলে প্রশাসনের উচ্চ মহল থেকে জানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান জনপ্রিয় কাউন্সিলর ফারুক হোসেন বলেন, সুখে দুঃখে সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকতে চাই, তাই আমি আশাকরি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের মাধ্যমে জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে।
বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী ও পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ জিন্নাতুল হক খান বলেন হুমকী ধামকী সত্বেও এখনো পর্যন্ত এলাকায় ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ বিরাজ করছে যদি ভোটের দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকে তাহলে আমি শতভাগ আশাবাদী আগামীতে আমি হরিণাকুন্ডু পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হব।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম টিপু মল্লিক বলেন, আমি দীর্ঘদিন পারিবারিক ভাবে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে আছি। স্থানীয় ও বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। আমার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে তারা নানামূখী উস্কানিমূলক কর্মকান্ড চালাচ্ছে, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো।
সাধারণ পৌরবাসীর দাবী সংঘাত, সংর্ঘষহীন নিরপেক্ষ ও শান্তি পূর্ণ ভোটের মাধ্যেম তাদের যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচিত হোক।
হরিণাকুন্ডু পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৭৫ জন। মহিলা ৮৬৮৩ পুরুষ ৮৩৯২ জন । ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ০৯টি। নির্বাচনের দিন ন্যূনতম এক প্লাটুন (স্ট্রাইকিং) ফোর্স বিজিবি টহলে থাকবে।
প্রতি টিমে একজন ম্যাজিট্রেট, এছাড়াও ৯ টি কেন্দ্রে ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সার্বক্ষানীক দায়িত্বে থাকবেন, সাথে পুলিশ সদস্য , আনসার , ভিডিপি সদস্য প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমান নিয়োজিত থাকবে।
৩০ জানুয়ারী নির্বাচন চলাকালীন নিরাপত্তার চাঁদরে ঢাকা থাকবে পৌরসভার সকল কেন্দ্র ও তার আশপাশের এলাকা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার রোকনুজ্জামান।
উল্লেখ্য, আগামী ৩০জানুয়ারী তৃতীয় ধাপের পৌরনির্বাচনে হরিণাকুন্ডু পৌরসভায় মেয়র পদে ৪জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৬জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।