রাতারাতি বড়লোক হওয়ার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে কিছু মানুষের মধ্যে। আর সেটি যেভাবেই হোক। নিয়মনীতি, সামাজিক মর্যাদাকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে যে কোন উপায়ে সম্পদ গড়তে হবে। এ যেন এক নেশা। ঠিক তেমনি মাদক ব্যবসা করে অল্পদিনের মধ্যে ট্রাক, মাইক্রো ও জমির মালিক হয়েছেন সোহেল রানা এমনি অভিযোগ ঘুরপাক খাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াসহ স্থানীয়দের মাঝে। তবে পুলিশের কাছে তার বিরুদ্ধে কোন মামলা বা অভিযোগ নেই।
অভিযুক্ত সোহেল রানা মেহেরপুর জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য এবং সদর উপজেলার বাবুরপাড়ার গ্রামের সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, সম্প্রতি গাঁজা চালান করার সময় ফরিদপুরের ভাঙ্গাতে মোটরসাইকেল সহ আটক হোন জনতার হাতে। ওই সময় স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে গাঁজা চালানের বিষয়টি স্বীকার করেন। জনতার হাতে গণপিটুনির একটি ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালের ফেসবুক পেজে ভাইরাল হয়। সেসকল পেজে বিভিন্ন জন তাকে মাদক ব্যবসায়ী, আদম ব্যবসায়ী বলেও মন্তব্য করেন। কথিত আছে দুই লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে তাকে সেখান থেকে মুক্তি পেতে হয়।
স্থানীয় যুব লীগের এক নেতা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবলীগ নেতা জানান, ইউপি সদস্য সোহেল রানার পিতার মাত্র কয়েক বিঘা জমি ছিল। ইউপি মেম্বর হওয়ার পর থেকে সে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। মাদক ব্যবসা করে রাতারাতি ট্রাক, মাইক্রো ও জমিসহ অনেক সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন। সম্প্রতি ফরিদপুরে গাঁজাসহ আটক হন। শুনেছি দুই লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে তিনি সেখান থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, মেম্বর হওয়ার পর থেকে বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে সোহেল রানা ও তার পরিবারের সদস্যরা। মাদক ব্যবসা করলেও তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেন না। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সে নিজেই বহন করেন গাঁজা। বড় ধরণের চালানাগুলো সে নিজেই বহন করে নিয়ে যায় জেলার বাইরে। তার এ ব্যবসা জেলার বাইরেই নাকি বেশি।
কুতুবপুর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন ছানু জানান, ইউপি সদস্য সোহেল রানা অল্প দিনে বাড়ি, গড়ি ও মাঠে আবাদি জমি কিনেছেন। তবে কিভাবে এ অর্থ পেয়েছেন তা তিনি বলতে চাননি।
এদিকে ফরিদপুরের ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর তিনি তার মেহেরপুরের নিজস্ব কার্যালয়ে অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজের রচনা করা গল্প শোনান। এসময় লাইভ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন জন তাকে মাদক ব্যবসায়ী ও আদম ব্যবসায়ী বলে মন্তব্য করেন। এমনকি অনেকে টাকা ফেরত চেয়ে এবং তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ারও দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সোহেল রানা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, তাকে ষড়ডন্ত্র করে একটি ঘরে আটকিয়ে মারধর করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান। তাই প্রাণ রক্ষার্থে তিনি গাঁজা চালানের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি শাহ দারা খান জানান, সোহেল রানার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন অভিযোগ শুনতে পাচ্ছি। তবে তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।