বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ হাজারের বেশি মানুষ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। যার মধ্যে ৯৮ শতাংশ নারী ও ২ শতাংশ পুরুষ। প্রতি বছর শুধু স্তন ক্যান্সারে সাড়ে ৭ হাজারের বেশি নারী মারা যাচ্ছেন।
এই প্রতিবেদন থেকে স্তন ক্যান্সারের ভয়াবহ ঝুঁকি সম্পর্কে কিছুটা হলেও আচ করা যায়। এই রোগ থেকে বাঁচতে হলে এর কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে জানা থাকা দরকার।
যাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি-
যাদের স্তন ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে, যারা নিয়মিত স্কিনং করান না, বয়স চল্লিশের বেশি, ১২ বছরের আগে ঋতুস্রাব শুরু হয়েছে, ঋতুস্রাব ৫৫ বছরের পরও চলতে থাকলে, প্রথম সন্তান ৩৫ বছরের পরে হলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। স্তনে অন্য কোনো রোগ হলে, বন্ধ্যত্ব ও উচ্চতা ৫’- ৮ ইঞ্চি বা তারও বেশি হলেও এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।
এই সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কখন দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন
আপনি স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেবে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লক্ষণগুলো হলো- বুকের মধ্যে শক্ত চাকা, ঘন পরু বা অমসৃণ, স্তন ফুলে গেলে, গরম অনুভব হলে, লাল হয়ে গেলে অথবা ত্বক কালো হয়ে গেলে।
এ ছাড়া স্তনের আকার আকৃতি যদি দ্রুত পরিবর্তন হয়, স্তনের ত্বকে গর্ত ও কুঁচকে যাওয়া, নিপলে চুলকানি, রেশ হওয়া, ঘা হওয়া, নিপল দিয়ে রক্ত বা সাদা, যে কোনো তরলজাতীয় আঠালো পদার্থ নিঃসরণ হলে ও স্তনের মধ্যে তীব্র ব্যথা হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাবেন।
এই রোগ থেকে বাঁচার উপায়-
যে কোনো রোগ নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ করা সবচেয়ে উত্তম। কিছু নিয়ম মেনে চললে এই রোগ খুব সহজে প্রতিরোধ করা যায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, প্রতিদিন ঘাম ঝড়িয়ে ৩০-৪৫ মিনিট ব্যায়াম করা, ফল ও সবজি খাওয়া, ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলা, ৩৫ বছরের পর পিল না খাওয়া, হরমন থেরাপি না নেয়া, শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো।
এ ছাড়া টেমক্সিফেন অথবা রেলক্সিফেন ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন না করা।
লেখক:
ডা. রফিক আহমেদ
বক্ষব্যাধি ও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ
ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।