প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে প্রায় তিন মাস অবরুদ্ধ থাকার পর ধীরে ধীরে জীবনযাপন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে চীনে। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর হার কমে আসায় কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছেন দেশটির নাগরিকরা।
শপিংমল-দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে, চালু হয়েছে গণপরিবহনও।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ৩ হাজার ৩২২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সেই সঙ্গে আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৬২০ জন। তাদের মধ্যে ৭৬ হাজারেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এদিকে, বিশ্বের প্রতি উহানবাসীর বার্তা-আতঙ্ক নয়, করোনা মোকাবেলায় হতে হবে সচেতন। উহানের এক বাসিন্দা জানান, দুদিন হলো দোকান খুলেছি। অল্প হলেও ক্রেতারা আসছেন। আগে যেখানে একটা ২২০ থেকে ২৪০ কেজি গরুর মাংস বিক্রি করতাম, সেখানে এখন সর্বোচ্চ ১০ কেজি বিক্রি হয়।
এরইমধ্যে খুলে দেয়া হয়েছে সাবওয়ে। চলছে অন্যান্য গণপরিবহনও। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি এবং ট্যাক্সি কম। যাত্রীরা জানালেন, আমরা ভয়কে জয় করতে শিখেছি। করোনা আমাদের আর হারাতে পারবে না।
গেল বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম ধরা পড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এরপর বিশ্বের অন্তত ২০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস। এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০ লাখ ৩০ হাজার এবং মৃতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ছাড়িয়েছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বিশ্বব্যাপী।
তবে করোনা মোকাবেলায় দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায় উহান প্রশাসন, পাল্টা ব্যবস্থা নেয়া হয়। ভাইরাসটির প্রকোপ ঠেকাতে লকডাউন করা হয় পুরো শহর এবং প্রদেশ।
প্রায় ছয় কোটি জনসংখ্যার প্রদেশটির প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে স্বাস্থ্য সেবা দেন কর্মীরা। ফলে কমে আসে ভাইরাসের বিস্তার। প্রায় ২ মাস পর প্রত্যাহার করা হয় লকডাউন। উহানের আরেক বাসিন্দা জানালেন, বিশ্ববাসীকে বলতে চাই করোনায় ভয় বা আতঙ্ক নয়, সতর্ক হোন সবাই। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন, স্বাস্থ্যকর খাবার খান, পরিষ্কার থাকুন। তাহলেই করোনাকে রুখে দেয়া সম্ভব।
নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার হার কমতে থাকায় কর্মীরা কাজে ফিরে যেতে শুরু করেছেন। কারখানা, স্কুল, জনসমাগম এবং পর্যটন স্থানগুলো আবার খুলতে শুরু করেছে। অবশেষে কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
সুত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন